রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতার হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার রাতের এই ঘটনার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে রাজশাহী নগরীতে রেটিনা কোচিং সেন্টারে ভাংচুর চালিয়েছে ছাত্রলীগকর্মীরা। ভাংচুর হয়েছে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও।
আহত আখেরুজ্জামান তাকিমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি।
গত জুলাই মাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে আবদুল্লাহ আল হাসান সোহেল নিহত হওয়ার পর তাকিমকে বহিষ্কার করে সংগঠন। তবে এরপর তিনি সক্রিয় ছিলেন।
“তিনটি মোটর সাইকেলে অজ্ঞাত পরিচয়ের ছয় যুবক পথরোধ করে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে পেটায় তাকে। পরে বাম হাত ও বাম পায়ের রগ কেটে দিয়ে চলে যায়।”
সোহেল হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ আল-তুহিন বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, তাকিমের শরীরের ছয় জায়গায় জখম হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
তুহিন বলেন, “তাকিম জ্ঞান হারানোর আগে বলে গেছে, শিবিরের কয়েকজন চিহ্নিত ক্যাডার এই হামলা চালিয়েছে। যাওয়ার সময় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ‘নারায়ে তকবির’ স্লোগান দিয়ে চলে যায় তারা।”
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, “রগ কাটার রীতি ছাত্রশিবিরের। মৌলবাদী এই গোষ্ঠী আশির-দশকের মতো তাণ্ডবলীলা চালানোর পাঁয়তারা শুরু করেছে।”
এ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাবি সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুউদ্দিন ইয়াহিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
হামলাকারীদের পরিচয় পাওয়া গেছে কি না- জানতে চাইলে ওসি বলেন, তা এখনি বলা যাচ্ছে না।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা ইমরান হোসেন ডেভিড এবং ২৪ অক্টোবর মাহবুব আলম রতন নামের দুজনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছিল।
তাকিমের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মিছিল বের করে। তার আগে নগরীতে মিছিল বের হয় এবং সেখান থেকে রেটিনা কোচিং সেন্টার ও ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাংচুর চালানো হয়।
নগরীর লক্ষ্মীপুরে রাত ৯টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভের সময় ছাত্রলীগকর্মীরা এই ভাংচুর চালায়। তাদের অভিযোগ, এই দুটি প্রতিষ্ঠান জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির দ্বারা পরিচালিত।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা একটি মোটর সাইকেলও পুড়িয়ে দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
রাজশাহী মহানগরী পুলিশ কমিনার এস এম মনিরুজ্জামান বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, হাসপাতাল ও কোচিং সেন্টারে ভাংচুরের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরো বলেন, “জামায়াত-শিবির যেন কোনো ধরনের নাশকতা না চালাতে পারে, সেজন্য পুলিশ সর্তক অবস্থায় রয়েছে।”
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ এবং আটক নেতাদের মুক্তি দাবিতে আন্দোলনরত জামায়াতকর্মীদের সঙ্গে গত দুই সপ্তাহ ধরে সারাদেশে পুলিশের সংঘাত চলছে।