রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত আখেরুজ্জামান তাকিম এখনো সংজ্ঞাহীন।
ছাত্রলীগের অভিযোগ, বুধবার রাত ৮টার দিকে তাকিমের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিকিউ) রাখা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক (সার্জন) অধ্যাপক একরামুল্লাহ বৃহস্পতিবার সকালে বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, তাকিমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
“তার শরীরে ১৪ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়ায় সেগুলো জোড়া দেয়া অনেক জটিল হয়ে উঠেছে।”
সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তাকিমের সংজ্ঞা ফেরেনি বলে এই চিকিৎসক জানান।
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আহমেদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু জানান, তারা সারা রাত তাকিমের পাশে ছিলেন। তবে তার অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।
প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান আহমেদ আলী।
তিনি বলেন, “ছাত্র শিবিরের ক্যাডারা কৌশলে রাতের অন্ধকারে এই ধরনের তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে।”
“আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
অবশ্য তাকিমের ওপর হামলার ঘটনায় সকাল পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি বলে জানান মতিহার থানার ওসি সানাউল হক।
তিনি জানান, রাত ৮টার দিকে তাকিমসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা খালেদা জিয়া হলের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়েন।
“তিনটি মোটর সাইকেলে অজ্ঞাত পরিচয়ের ছয় যুবক তাদের পথরোধ করে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। পরে বাম হাত ও বাম পায়ের রগ কেটে দিয়ে চলে যায়।”
২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভতি হওয়া তাকিম গত ১৬ জুন ১৫২ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু দলীয় অন্তর্কোন্দলে গত ১৬ জুলাই ছাত্রলীগকর্মী আব্দুল্লাহ আল সোহেল নিহত হওয়ার পর তাকিমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অবশ্য এরপরও বিভিন্ন ঘটনায় তাকিমকে সক্রিয় দেখা যায়। গত সেপ্টেম্বরে ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় তিনি তৎপর ছিলেন। অক্টোবরে শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ও অস্ত্র হাতে দেখা যায় তাকিমকে।
তার ওপর হামলার প্রতিবাদে রাত পৌনে ১০টার দিকে মিছিল বের করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। এর আগে রাজশাহী নগরীতে মিছিল থেকে রেটিনা কোচিং সেন্টার ও ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাংচুর চালানো হয়।
রাতের ঘটনার পর সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ক্লাসে উপস্থিতিও ছিল কম।
প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, “ক্যাম্পাসের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।