আদালত বর্জন ও অবমাননাকর আচরণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
তবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর এই আইনজীবীকে ক্ষমা করা হবে কি-না আগামী ২৩ ডিসেম্বর তা জানাবে ট্রাইব্যুনাল।
এর আগ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি নিজামুল হক।
জামায়াত নেতাদের অপর দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও তানভীর আহমেদ আল-আমীনের আদালত অবমাননার বিষয়েও একই দিনে আদেশ দেবে ট্রাইব্যুনাল।
তবে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তারা আদালতের নিয়মিত কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।
এক সাক্ষীকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা জানানোর পরও উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলে গত ৫ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ বর্জন করেন ওই তিন আইনজীবী।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার শুনানি চলাকালে ওই অভিযোগ তুলে তারা বেরিয়ে যান।
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত তাদের সাক্ষীর নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা না নেয়ায় তারাও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
পরদিন প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম আদালতকে বলেন, আসামীপক্ষের আইনজীবীরা নাটক সাজিয়ে মামলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন।
আদালত অবমাননার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এ বিষয়ে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি নিজামুল হক ওই তিন আইনজীবীকে কারণ দর্শাতে বলেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না- ২২ নভেম্বরের মধ্যে তা জানাতে বলে ট্রাইব্যুনাল।
তবে তাজুল ইসলাম এর আগেও আদালত বর্জনের মতো আচরণ করায় তাকে ‘গুরুতর অসদাচরণের’ কারণে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত তাকে এজলাসে আসতে নিষেধ করেন বিচারক।
জবাব দেয়ার নির্ধারিত দিনের একদিন আগে ওই তিনজনের পক্ষে অন্য আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে লিখিত জবাব জমা দেন। বৃহস্পতিবার সেগুলো আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তাজুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও আবদুর রাজ্জাক। তারা তাজুলের হয়ে ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনে আরো শুনানি হবে। আদেশের বিষয়ে জানানো হবে ২৩ ডিসেম্বর। ওই দিন পর্যন্ত তাজুল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।