খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অবৈধভাবে সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে পাচার করা ১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফেরত এনেছে। দুদকের সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় এ অর্থ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘২টি অ্যামাউন্ট একটি হলো ২০ লাখ ৪১ হাজারের
চেয়ে একটু বেশি সিঙ্গাপুর ডলার এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আজকে ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলারের অর্থ আমাদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।’
গোলাম রহমান আরো বলেন, রাজনৈতিক মামলায় এটাই প্রথম বিদেশের অর্থ ফেরত পাওয় গেছে। আর এ অর্থ দুর্নীতি বিরোধী কাজে ব্যয় করা হবে।
‘বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এ ব্যাপারে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। যে টাকা ফেরত এসেছে তা দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন সোনালী ব্যাংক রমনা করপোরেট শাখায় স্টোলেন অ্যাসেট রিকোভারি নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, আজকে ব্যাংক থেকে আমাকে জানানো হয়েছে যে একটি অ্যামাউন্ট তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো সিঙ্গাপুর ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে একটি আ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০০৫ সালে ওই ব্যাংকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০ কোটি টাকা পাচার করেন তিনি। যা মানি লন্ডারিং মামলার আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুদক এ ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করে।
পরে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ সিঙ্গাপুরে টাকা পাচারের অভিযোগে কোকোর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এতে প্রভাব খাটিয়ে সিমেন্স কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেয়া ও চট্টগ্রাম বন্দরে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের এজেন্টদের কাছ থেকে কমিশন হিসেবে নেয়া ঘুষের টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে একই বছরের ১২ নভেম্বর অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার সময় কোকোর সহযোগী হিসেবে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।
পরে ২০১১ সালের ২৩ জুন মানি লন্ডারিং মামলায় কোকোর ৬ বছরের কারাদণ্ডসহ ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।