ঢাকা, ২৯ এপ্রিল: প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারে সরকারের ব্যর্থতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
তারা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে তাদের দেয়া সময়সীমার সঙ্গে নতুন এই বিষয়টি যোগ করে বিএনপি কঠোর আন্দোলনের পথেই হাঁটছে।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা হুশিয়ার করে বলেছেন যে, হরতালের মতো কর্মসূচি জোর করে চাপিয়ে দেয়া হলে পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবী মেনে নেয়ার জন্যে বিএনপি এর আগে সরকারকে ১০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। আর ওই সময়সীমার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি ঘটলো।
এই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে বিএনপি তার অস্তিত্বের প্রতি হুমকি বলে মনে করছে। ফলে দলটি গত সপ্তাহে তিন দিনের হরতাল শেষ করেই আবার দুই দিনের হরতাল ডেকেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মনে করছেন যে, তার দল সর্বাত্মক রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, হরতালের বিকল্প কোনো কঠিন কর্মসূচি না থাকার কারণেই বিএনপি হরতাল করছে। তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ মনে করেন, হরতাল দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।
“হরতাল দিয়ে বিরোধী দল হয়তো বর্তমান সরকারকে একটু বেকায়দায় ফেলতে পারে কিন্তু এতে খুব এটা লাভ হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো খুব একটা সহজ বলে আমি মনে করি না।” বলেন হানিফ।
গত সপ্তাহে পরপর তিনটি হরতাল হওয়ার কারণে হরতালের বিপক্ষে জনমত লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে অনেকেই হরতালের সমালোচনা করছেন।
বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন যে তাঁরা জনসমর্থন হারানোর আশঙ্কা করছেন না, যদিও জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই বিএনপি এর আগে খুব বেশি হরতাল ডাকেনি।
“৯১ থেকে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলো। এবং ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণের ভোটে। আবার ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ১৩৩ দিন হরতাল করেছে। আমরা যথেষ্ঠ কিছু করছি না এ ধরনের অভিযোগও জনগণের মধ্যে আছে।” বলেন মোশাররফ হোসেন।
হরতালের সময় মাঠে থাকার জন্যে আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সরকারের মন্ত্রীরা।
এই পরিস্থিতিতে দেশে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংঘাতময় এই পরিস্থিতি এড়াতে একটি সম্ভাব্য পথ হতে পারে আলোচনা। কিন্তু কোনো পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলেই নিশ্চিত করছেন রাজনৈতিক নেতারা। সূত্র: বিবিসি।