ঢাকা, ২ ডিসেম্বর : পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নির্ভর করছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরবর্তী সিদ্ধান্তের ওপর বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্টস্টেইন।
রবিবার বিকেলে দুদক প্রতিনিধিদের সাথে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের দ্বিতীয় সফরের এটিই প্রাথমিক বৈঠক। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় সফরে এ প্যানেল দুদকের পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অনুসন্ধানের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে।
দুদক সূত্র জানায়, আগামীকাল সোমবার পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে নোটিশ করা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণচুক্তি স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। ঋণ পাওয়ার জন্য চারটি শর্ত জুড়ে দেয় দাতা সংস্থাটি। সেই শর্ত চারটি পালন না করায় ২৯ জুন ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক।
এরপর দুর্নীতিতে সন্দেহভাজন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ ও ড. মসিউর রহমানকে ছুটিতে পাঠানোর পর চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের দেয়া শর্ত অনুসারে ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতুতে পরামর্শক নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর বিশ্বব্যাংকের গঠিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গত ১৪ অক্টোবর প্রথম দফায় ঢাকায় আসেন।
উল্লেখ্য, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু নির্মাণে প্রকল্প ব্যয় ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার ধরা হয়েছিল। এতে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৬১ দশমিক পাঁচ কোটি, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ৪১ দশমিক পাঁচ কোটি এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) ১৪ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ঋণসহায়তা স্থগিত করার পাশাপাশি চুক্তিও বাতিল করে তারা। বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বিতীয় দফায় দুদকের সঙ্গে আলোচনার জন্য এখানে অবস্থান করছেন।