ঢাকা, ৪ডিসেম্বর: বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মতৈক্য হয়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্পে যাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ করছে তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে এ মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। তবে কোন অর্থের বিনিময় হয়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আমরা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একমত হয়েছি। তিনি বলেন, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সাত থেকে আটজন জড়িত আছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করবে।
তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়া হয়নি উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে একটি খসড়া জমা দিয়েছে। এটি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সব বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একমত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বুধবার বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধের সঙ্গে বৈঠক হবে।
সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া ও কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেসসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করা হয় দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে। এছাড়া দালিলিক প্রমাণ না পওয়ায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা না করার সুপারিশ করে বিষয়টি কমিশনের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কমিশন নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করে এই দুই সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেল এই দুইজনের বিরুদ্ধেও মামলা করার কথা বলেছে। এই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা না করার প্রশ্নে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি ও দুদক একমত হতে পারেনি।
তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, সেতু বিভাগের তত্ত্বাবাধয়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ, একই বিভাগের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল এবং এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইপিসির গোলাম মোস্তফা।