বার্তা৭১ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন শিবিরের হামলা ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে মোকাবেলার করার জন্য পুলিশের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জামায়াত-শিবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকারে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জামায়াত-শিবিরের অসৎ উদ্দেশ্য মোকাবেলা করে পুলিশ বাহিনী দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎরতা এবং জঙ্গিবাদ দমনে ন্যাশনাল পুলিশ ব্যুরো অব কাউন্টার টেরোরিজমের একটি ইউনিট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎরতা এবং জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিট কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বিজয়ের মাসে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, দুই লাখ নিভৃত মা-বোন যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান থাকলেও দীর্ঘ দিন তা মূল্যায়ন করা হয়নি। বর্তমান সরকার তাদের মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ পুলিশ বাহিনীকে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১১ প্রদান করেছে।
পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ বিভাগে ৫টি গ্রেডে পদ সৃষ্টির কাজ চলছে। এসআই ও সার্জেন্টদের তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় এবং ইন্সপেক্টর পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণীর নন ক্যাডার পদে উন্নীত করা হয়েছে।
পুলিশ বাহিনীর জনবল বাড়াতে ৭৩৩টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৪৬৫টি ক্যাডার পদসহ ২৫ হাজার ১৮৯টি পদ সৃজন সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে পুলিশের সামর্থ্য বেড়েছে, পুলিশ বাহিনীর পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী পুলিশ সদস্য হাইতি ও কঙ্গোতে কাজ করছে। শান্তি মিশনে পুলিশ প্রদানকারী শীর্ষ দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান দশম এবং এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।
২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও আমরা খাদ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পেরেছি। এ চার বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ৮০ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, কৃষি, তথ্য প্রযুক্তিসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছি। জনগণ সুফল পেতে শুরু করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
মানবাধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির তিনদিনব্যাপী শতবর্ষ উৎসব ঘোষণা করেন। এর আগে সাড়ে ১০টায় সারদা হেলিপ্যাডে নামেন প্রধানমন্ত্রী।
১০টা ৫৫ মিনিটে তিনি হেরিটেজ প্যারেড গ্রাউন্ডে পুলিশের ১০টি কনটিনজেন্ট ও ১টি পতাকাবাহী দলের অভিনন্দন গ্রহণ করেন। পরে ১০টি কনটিনজেন্ট মার্চপাস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান। এ সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল নাইম আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।