বার্তা৭১ডটকমঃ আজ ১৪ ডিসেম্বর বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন । দেশের শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের হারানোর দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৮টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে কিছু সময় আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ।
এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আবারো ফুল দেন শেখ হাসিনা।
শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়ার পর শেখ হাসিনা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী তাদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেণ এবং মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টগণ, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
৭১’এর এই দিনে হত্যাকাণ্ডের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে দেশের মানুষ।
বলা হয়, পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পনের দুদিন আগে পাকিস্তানি বাহিনী এ নিধনের কাজটি করে, যার উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে আর না দাঁড়াতে পারে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তার বাণীতে বলেছেন, জাতির সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১ সালে জাতিকে বুদ্ধি পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে আমাদের বিজয়কে দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করেছিলেন।
কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে ১৪ ডিসেম্বর রাতে কুলাঙ্গার কিছু বাঙ্গালির সহায়তায় হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণী বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতিকে মেধাহীন করাই ছিলো তাদের হীন উদ্দেশ্য। এ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডে জাতির যে ক্ষতি হয় তা অপূরণীয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে আল বদর, আল শামস ও রাজাকার বাহিনী বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের সেরা সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ক্ষতি অপূরণীয়।
বিরোধী দলীয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার বাণীতে উল্লেখ করেছেন, ‘৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতির যে সূর্য সন্তানদের আমরা হারিয়েছি সে ক্ষতি আজও কাঁটিয়ে উঠতে পারিনি। যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা জীবনের মায়া তুচ্ছ জ্ঞান করেছেন, সেই দেশপ্রমে উজ্জীবিত হয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানান তিনি।