বার্তা৭১ ডটকমঃ জামায়াতে ইসলামীর ডাকা আধাবেলা হরতালে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেট। হরতালের শুরুতেই জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা মিছিলে বাধা পেয়ে নগরীতে চোরাগুপ্তা হামলা শুরু করে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের মুক্তির দাবিতে আজকের আধাবেলা হরতাল পালনের সময় নগরীর দক্ষিণ সুরমা, মীরাবাজার ও মুজমদারি এলাকায় চোরগুপ্তা হামলা চালিয়ে একটি অটোরিকশা ও দুটি ট্রাক ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ রোড এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয় হরতাল সমর্থকদের। হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির ঝটিকা মিছিল বের করলে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
এছাড়া নগরীর তেমুখী ও শিবগঞ্জে এলাকায় ছাত্র শিবির পিকেটিংয় করে। তেমুখীতে মিছিল শেষে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করে হরতাল সমর্থনকারীরা। এছাড়া মিরাবাজার এলাকায় একটি ট্রাকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে ভাংচুর করে।
জানা গেছে, হরতাল সমর্থনকারীরা রাস্তায় বিক্ষিপ্তভাবে চোরাগোপ্তা পিকেটিং চালানোর চেষ্টা করছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভোরে পিকেটিংয়ের চেষ্টা করলেও পুলিশ আসা মাত্রই পিকেটাররা দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় হরতালের সমর্থনে পিকেটিংয়ের চেষ্টাকালে পুলিশের সাথে শিবির কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রদক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শিবিরকর্মীরা জৈন্তাপুর উপজেলার দিঘিরপাড়ে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিংয়ের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে শিবিরকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে শিবিরকর্মীরা সেখান থেকে পালিয়ে গেলে পুলিশ তাদের একটি মোটরসাইকেল আটক করে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল এ খবর নিশ্চিত করেন।
এদিকে হরতালে নাশকতা এড়াতে ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার অমূল্য ভূষণ বড়ুয়া।
তিনি বলেন, সব ধরনের নাশকতা এড়াতে ও জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মাঠে রয়েছে। র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনী মাঠে তৎপর রয়েছে।
ভোর থেকে নগরীর কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি, নগরীর দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন নাইটকোচগুলো ভোরেই নিরাপদে সিলেট এসে পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের মুক্তির দাবিতে সিলেটে পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল করতে না দেয়ায় জামায়াত এ হরতাল আহ্বান করে।