ঢাকা : পদ্মা সেতু দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের মামলার অন্যতম দুই আসামির জামিন শুনানির ওপর নির্ভর করছে অন্য পাঁচ আসামিসহ সবার গ্রেফতার।
মামলার ১ নম্বর আসামি সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ২ নম্বর আসামি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউসের পক্ষ থেকে গত বুধবার তাদের আইনজীবী সুপ্রিমকোর্টে আগাম জামিন আবেদন জমা দেন। ওই আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে আসামিদের গ্রেফতারে তোড়-জোড় প্রকাশ করা হলেও আদালতের শুনানির ওপর নির্ভর করছে বাকি পাঁচ আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়। এই আসামিরা হলেন- সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, এসএনসি লাভালিনের সাব-কনসালন্টেড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং করসাল লিমিটেডের (ইপিসি) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা, এসএনসি লাভালিনের আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, ভাইস-প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও কেভিন ওয়ালেস।
আসামিদের জামিন শুনানি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘যে দুজন আসামি জামিনের আবেদন করেছেন তাদের আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি হবে।’
শুনানির ওপর বাকি পাঁচ আসমিসহ সবার গ্রেফতার নির্ভর করছে কিনা জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্ল্যানিংয়ের মধ্যে যা রয়েছে; এখন তা বলা যাবে না। তাহলে মামলার ক্ষতি হবে।’
গত ১৭ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় সাতজনকে আসামি করে মামলাটি করেন। যদিও ওই মামলার সন্দেভাজন সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণ বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষে ফেব্রুয়ারিতে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে চায় সরকার।
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯০ কোটি ডলার। এরমধ্যে বিশ্বব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যা মোট ব্যয়ের প্রায় ৫২ শতাংশ। এর মধ্যে ১২০ কোটি ডলার ঋণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রয়োজনে আরও ৩০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক এমনটাই কথা ছিল।
বিশ্বব্যাংক ছাড়াও ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সাড়ে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা ৪০ কোটি ডলার, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) ১৪ কোটি ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে।