ঢাকা, ২৬ ডিসেম্বর,(বার্তা৭১ডটকম): পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলায় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও তত্ত্বাবাধয়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর পূর্তভবনের সামনে থেকে পুলিশের সহায়তায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি বিশেষ টিম তাদের গ্রেপ্তার করে।
দুদক সূত্র জানিয়ে, উইং কমান্ডার তাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে দুদকের একটি বিশেষ টিম বেলা ১টা ৫০ মিনিটে তাদের গ্রেপ্তার করে দুদক প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে বুধবার জামিনের জন্য হাইকোর্টে যান মোশাররফ ও ফেরদৌস। হাই কোর্টের অবকাশকালীন বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এই দুই জনের জামিন আবেদনের শুনানি না করে আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে উত্থাপন করতে বলে।
গত ১৭ ডিসেম্বর পদ্মাসেতু প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। রাজধানীর বনানী থানায় দুদকের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অপর পাঁচ আসামি হলেন- সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় এজেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের (ইপিএস) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা, কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, ওই কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ এবং কেভিন ওয়ালেস।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিগণ একে অপরকে আর্থিক লাভবানের অসৎ অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিধি-বিধান ভঙ্গ করে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে পদ্মাসেতু প্রকল্পের নির্মাণ তদারকী পরামর্শক হিসাবে কানাডিয়ান এসএনসি-লাভালিনকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আসামিরা এ জন্য বিভিন্ন সময় এসএনসি-লাভালিনকে প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজপত্র হস্তান্তর করে। তারা বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঘুষের পার্সেন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য মূল্যায়ন কমিটি চারবার ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
এজাহারে সৈয়দ আবুল হোসেন ও আবুল হাসান চৌধুরীর বিষয়ে বলা হয়, সৈয়দ আবুল হোসেন এবং আবুল হাসান চৌধুরী ২০১১ সালের ২৯মে এসএনসি লাভালিয়নের তিন কর্মকর্তা কেভিন ওয়ালিস, রমেশ সাহা, মো. ঈসমাইল এবং ইপিএস’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফার সাথে ঢাকায় বৈঠক করেন। এছাড়া রমেশের নোটবুকে কাজ পাওয়ার পর পদ্মা প্রজেক্ট কমার্শিয়াল কস্ট (পিসিসি) হিসাবে পার্সেন্টেজ দেয়ার বিষয়টিতে দুই আবুলসহ আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ ছিল। তবে এ দু’জনের বিরুদ্ধে এ যাবৎ পাওয়া অপরাপর সাক্ষ্যদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি বিধায় আসাসি হিসাবে তাদের বিবেচনা করা যাচ্ছে না। তাই তদন্তকালে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
দীর্ঘ এক বছরের বেশী সময় ধরে অনুসন্ধান করে দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক আবদুল¬াহ আল জাহিদ ও মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত টিম গত ৪ ডিসেম্বর অনুসন্ধান প্রতিবেন জমা দেন। টিমের অপর দুই সদস্য হলেন, দুদকের উপ-পরিচালক মীর্জা জাহিদুল আলম এবং গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।