ঢাকা : দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার। বিরোধী দলগুলোকে দমনে সরকারের বর্তমান কৌশলের পরিণতিতে তা হবে বলে মন্তব্য করেছে।
এপ্রিল মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে উল্লেখ করেছে, গুম-গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছেই। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার জন্য সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবহার করার কৌশল বাংলাদেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলবে। তাদের হিসাবে এপ্রিল মাসে পাঁচ ব্যক্তি গুম হয়েছেন।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর অনেকেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ভিকটিমদের পরিবারগুলোর দাবি, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই তাদের ধরে নিয়ে গেছে এবং এরপর থেকে তারা গুম হয়েছেন। এসব ঘটনায় অধিকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিখোঁজ ব্যক্তিদের দ্রুত উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছেন, এপ্রিল মাসে পাঁচ ব্যক্তি গুম হয়েছেন। ১১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তাদের মধ্যে নয়জন ‘ক্রসফায়ার/এনকাউন্টার/বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন, র্যাব কর্তৃক আটজন ও পুলিশ কর্তৃক একজন। আট ব্যক্তি গণপিটুনিতে মারা গেছেন। ১৬ জন সাংবাদিক আহত, একজন হুমকির সম্মুখীন এবং একজন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। ২৯ জন নারী যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে এবং ১২ জন বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৪৭ জন নারী । তাদের মধ্যে আটজন আহত হয়েছেন, তিনজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, একজন অপহৃত ও ৩৫ জন বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটে বা তাদের পরিবারের সদস্যদের আক্রমণে যথাক্রমে একজন পুরুষ নিহত এবং ছয়জন পুরুষ ও দুইজন নারী আহত হয়েছেন। ৫০ জন নারী ও মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
তাদের মধ্যে ১৭ জন নারী, ৩২ জন মেয়ে শিশু ও একজনের বয়স জানা যায়নি। উক্ত ১৭ জন নারীর মধ্যে দু’জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ছয়জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ৩২ জন মেয়ে শিশুর মধ্যে দু’জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এবং গণধর্ষণের শিকার হয়েছে নয়জন ।
এ সময়ে ধর্ষণের কারণে একজন শিশু আত্মহত্যা করেছে। ১০ জন এসিডদগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন নারী, তিনজন পুরুষ এবং মেয়ে শিশু তিনজন।