ডটকমঃ কয়েক যুবকের বেসামাল আচমকা আচরণে হতবাক সিলেটে ডিজে মডেল ফাতেমা ইয়াসমিন রুমি। রিহার্সেলে তার দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে ওই যুবকরা। এরপর যখন রিহার্সেল শেষে তিনি শো’র জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখন ওই যুবকরা তাকে আক্রমণ করে। তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় একটি কক্ষে। এতে বিরক্ত ও বিব্রত হন মডেল রুমি। নিজেকে ক্রমেই অনিরাপদ মনে হয় তার। এ কারণে তিনি নিজের বাসায় ফোন করেন। বাসা থেকে ছুটে যান নিকটজনেরা। গত ৯ই ডিসেম্বর রাতে সিলেটের পাঁচ তারকা হোটেল রোজভিউয়ে এ ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয় শেষে রুমিকে ওই যুবকরা শো-ও প্রদর্শন করতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুব্ধ রুমি সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। গতকাল রুমি তার বক্তব্য তুলে ধরেন। ফাতেমা ইয়াসমিন রুমি বর্তমানে সিলেটের ডিজে মডেল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফ্যাশন শোতে অংশ নেন তিনি। তবে খুব বেশি দিন হয়নি তার এ পথে যাত্রা। সবে মাত্র শুরু। একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ফ্যাশন শোতে অংশ নেয়া ছিল তার দ্বিতীয় অংশগ্রহণ। এর আগে তিনি আরও একটি ফ্যাশন শোতে অংশ নেন। তবে নাটকের সঙ্গে বেশ পরিচিত। তিন বছর ধরে নবশিখা নাট্যদলের হয়ে নাটকেই কাজ করছেন। ঢাকার মিডিয়াতে সমপ্রতি তার অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। ঢাকায় নির্মিত ‘ফায়ার ফ্লাই’ নামে একটি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। এছাড়া সিলেটী নাটকেও সমপ্রতি পদচারণা বেড়েছে। সিলেটী নাটক ফকির মেলাতেও অভিনয় করেছেন। রুমি গতকাল জানিয়েছেন, ৯ই ডিসেম্বর তিনি হোটেল রোজভিউ’র শোতে অংশ নিতে যান। সঙ্গে ছিল তার বোন সুমি। সুমি ক্লাস সেভেনে পড়ে। তিনি বোনকে নিয়ে প্রথমে রোজভিউয়ের চতুর্থ তলায় রিহার্সেলে অংশ নেন। ওই সময় কয়েক যুবক তার দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। তবে এতে পাত্তা দেননি রুমি। রিহার্সেল শেষে যখন তিনি বাইরে বের হয়ে আসেন তখন ওই যুবকরা তার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। খারাপ ভাবভঙ্গি প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যেতে চায়। উপস্থিত লোকজন তাকে রক্ষা করে। এই ঘটনার পর তিনি ৫ম তলার রেস্টুরেন্টে চলে যান। সেখানে বোনকে নিয়ে জুস পান করেন। ওই সময় অনুষ্ঠানস্থলে আসে ওই যুবকরা। তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা অন্যদের জানায়, রুমিকে তাদের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে দেয়া যাবে না। যদি তারা পারফর্ম করতে দেয় তাহলে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়া হবে। এ রকম হুমকির কারণে শেষ পর্যন্ত রুমি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। নিকট আত্মীয়রা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে, কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা জিডিতে আখালিয়ার নেহারীপাড়া ১২/এ রশিদ মঞ্জিলের বাসিন্দা ফাতেমা ইয়াসমিন রুমি উল্লেখ করেন, হোটেল রোজভিউতে যাওয়ার পর কয়েক অজ্ঞাতনামা যুবক তাকে উত্ত্যক্ত করে। এতে তিনি তাদের আচরণের প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে ওই যুবকরা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাধা দেয় এবং তখন ওরা জানায়, সে যদি অনুষ্ঠানে অংশ নেয় তাহলে অনুষ্ঠান শেষে তাকে ধরে নিয়ে যাবে। এবং অনুষ্ঠান শেষে হাত-পা ভেঙে ফেলবে। জিডিতে তিনি জানান, এতে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। শেষে খোঁজ নিয়ে ওই যুবকদের নাম পরিচয় বের করেন। এর মধ্যে একজন হচ্ছে লিটু। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়। জিডিতে রুমি তার প্রতি উত্ত্যক্ত আচরণের সুবিচার প্রার্থনা করেন। তবে রুমি জানান, লিটুকে তিনি মুখ পরিচয়ে চিনতেন না। জিন্দাবাজারে একটি মার্কেটে হয়তো দেখা হয়েছে। হয়তো দোকানি হিসেবে তার সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। এছাড়া কয়েক মাস আগে লিটুর এক বন্ধু ফোন করে তাদের ফ্যাশন শোতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু ওই সময় রুমি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ কারণে হয়তো লিটু তার ওপর ক্ষুব্ধ রয়েছেন বলে দাবি করেন রুমি। এছাড়া ওই দিন হোটেল রোজভিউতে শুধু রুমিই উপস্থিত ছিলেন না, ছিলেন প্রায় এক ডজন তরুণ-তরুণী মডেল। এদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টুসি, শোভা, মনি, তৃষা, বিশ্ব, রাজু ও শাওন। এদিকে ডিজে পার্টি সবসময় সিলেটে বিতর্ক ছড়াচ্ছে। এতে করে শোবিজ অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ছে স্ক্যান্ডালও। উগ্র তরুণ-তরুণীদের আচরণে প্রায়ই ঘটছে বিতর্কিত ঘটনা। আর শোবিজ অঙ্গনে সুন্দরী ললনাদের খপ্পড়ে পড়ে অনেকেই হচ্ছে নিঃস্ব। তবে লিটু গতকাল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, খারাপ ব্যাকগ্রাউন্ডের মেয়েরা সিলেটের শোবিজ অঙ্গনকে কুলষিত করেছে। রুমির ব্যাকগ্রাউন্ড মোটেও ভাল নয়। সে কয়েক মাস আগে পুরুষ সঙ্গীসহ আটক হয়েছিল। ওই দিন হোটেল রোজভিউতে যারা আয়োজক ছিল তারা ছিল আমার ছোট ভাইরা। এ কারণে আমি রুমিকে তাদের অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়ার জন্য বলে দেই। আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আয়োজকরা তাকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়নি। আর এ কারণেই রুমি ক্ষুব্ধ হয়ে কুৎসা রটাচ্ছে। যা আদৌ ঠিক নয় বলে দাবি করেন লিটু।