বার্তা৭১ ডটকমঃপৃথিবী জানুক আমার মেয়ের নাম জ্যোতি সিং পান্ডে। ধর্ষণের শিকার হয়ে যেসব নারী বেঁচে আছে তারা আমার মেয়ের নাম শুনে বেঁচে থাকার প্রেরণা অনুভব করুক। আমার মেয়ের কাছ থেকে তারা লড়াই করার সাহস পাক। কথাগুলো বলছিলেন দিল্লির চলন্তবাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারী সেই মেডিকেল ছাত্রীর বাবা বদ্রি সিং পান্ডে (৫৩)।
ব্রিটেনের সানডে পিপলস পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এভাবেই জ্যোতির বাবার সাক্ষাতকারটি প্রকাশ করে। পত্রিকাটি অনুমতি নিয়ে ওই ছাত্রী ও তার বাবার নাম প্রকাশ করেছে। তবে পরিবারের অনুরোধে ছাত্রীর কোনো ছবি প্রকাশ করেনি তারা।
বদ্রি সিং পান্ডে বলেন, “আমরা চাই, সারাবিশ্ব তার আসল নাম জানুক। আমার মেয়ে কোনো অন্যায় করেনি। সে নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেছে। আমরা তার জন্য গর্বিত। এ ধরনের হামলার পর যেসব নারী বেঁচে আছেন, তাদের জন্য আমার মেয়ের নাম প্রেরণা জোগাবে।”
এতোদিন সে ভারতকন্যা, দামিনী ও আমানত নামে পরিচিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ নামগুলো তার সাহসকে অস্বীকার করার মতো। সে নিজেকে বাঁচানোর জন শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম করেছে।”
উত্তর প্রদেশের বিলিয়া গ্রামে নিজের পৈতৃক বাড়িতে এ সাক্ষাৎকার দেন তিনি। অভিযুক্তরা শিগগিরই ফাঁসিতে ঝুলবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারটি নেওয়ার সময় জ্যোতির পরিবারের প্রায় সব সদস্যের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তবে মা আশার (৪৬) কোনো মন্তব্য নেওয়া যায়নি। মারাত্মক মানসিক আঘাতে ৪৬ বছর বয়সী মা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।
এর আগে শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমের কাছে প্রথম মুখ খুলেন, ওই নির্যাতনের শিকার জ্যোতির বন্ধু অবিন্দ্র। তিনি জ্যোতির মৃত্যুর জন্য পুলিশের অবহেলা ও সময়ক্ষেপণকে দায়ী করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে নয়াদিল্লিতে চলন্তবাসে ছয় পাষণ্ডের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন জ্যোতি সিং পান্ডে ও তার বন্ধু অবিন্দ্র পান্ডে। নির্যাতনের পর তাদেরকে বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয়। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান জ্যোতি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ভারতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।