বার্তা৭১ ডটকমঃ আইএমএফ ঋণের পরবর্তী কিস্তির অর্থ পেতে সরকারকে সারের দাম আবারো বাড়াতে হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রতিশ্রুত ঋণের এর পরবর্তী কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য সারের উপর ভর্তুকি কমানোর শর্ত বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে বলে ইআরডি সূত্রে জানা গেছে। এই শর্তও সরকারের বর্তমান মেয়াদেই পালন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বর্ধিত ঋণ সুবিধা তহবিলের (ইসিএফ) আওতায় ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশকে ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ঋণ অনুমোদন দেয়। একই মাসের শেষ দিকে ঋণের প্রথম কিস্তি ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার কিছু বেশি ছাড় করেছিল। তিন বছরে সমান সাত কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধের কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম সময়মতো সমন্বয় করতে না পারায় এই ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধের বিষয়টি ছয় মাস পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখেছিল সংস্থাটি।
জানুয়ারি মাসে জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর পর চলতি মাসেই দ্বিতীয় কিস্তির অর্ধ পরিশোধ করা হতে পারে বলে আইএমএফ এর ঢাকাস্থ মিশন প্রধান ইটেরি ভিনট্রেজ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) জানিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পরবর্তী কিস্তির টাকা পাওয়ার জন্য সারের ভর্তুকি কমানো, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো এবং ভ্যাট আইনের সংশোধনকে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে বলেও একই সূত্রে জানা গেছে।
ইসিএফ ঋণ একটি কঠিন শর্তযুক্ত ঋণ। এর সুদের হার ও পরিশোধের ধরন ও স্বাভাবিক ঋণ থেকে আলাদা। এই ঋণ ব্যালান্স অব পেমেন্ট সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা যায়। দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ পাওয়ার জন্য সরকারকে সকল মহলের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়াতে হয়েছে। উল্লেখ্য এই ঋণ সুবিধা পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দেন দরবার করেছে।
তিন বছরে মোট সাতটি কিস্তিতে আইএমএফ ঋণের পুরো অর্থ দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতি কিস্তিতে ছাড় করা হবে ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলার। আইএমএফের প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের এ ঋণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট খাতে যুক্ত হবে। সরকার সরাসরি এ অর্থ ব্যবহার করতে পারে না।
আইএমএফের ইসিএফ ঋণের প্রধান শর্ত হলো সার, জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করে বাজেটের উপর ভর্তুকির চাপ কমানো। ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকসহ সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি জোরদার করা এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন সংশোধন করা।