বার্তা৭১ ডটকমঃ বছরের শুরুতে তিন মাসের সহিংস অবরোধ-হরতালের পর দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফের সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে তিনি বলেছেন, এবারের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ। দল গুছিয়েই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ওই আন্দোলনে নামবেন তিনি।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত লাগাতার অবরোধ-হরতাল ডেকেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে নতি স্বীকারে বাধ্য করতে না পারার মধ্যে আন্দোলনে ছেদ টেনেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
ওই আন্দোলনের মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু ঘটে মালয়েশিয়ায়। এক ছেলেকে হারানোর পর অন্য ছেলে তারেক রহমানকে প্রবাসে রেখে শনিবার ঈদুল ফিতর কাটে তার।
ঈদের দিন দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কূটনীতিক ও গণমান্য নাগরিকসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ‘অপশাসনে’ জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে আসা খালেদা জিয়ার কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- বিএনপি রাজপথে সক্রিয় নয় কেন?
জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপির নামে শুধু মামলা আর মামলা। আমাদের অনেক নেতা-কর্মী জেল আছে। কত ছেলে যে গুম হয়েছে, তার হিসাব নেই। কাজেই বিএনপিকে এখন পুনর্গঠিত হতে হবে। এরপর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করব।” ‘জ্বালাও-পোড়াও’ এর বিরুদ্ধে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমরা সেই আন্দোলন করব, যে আন্দোলন দেশের জন্য হবে, মানুষের কল্যাণ হবে।
“আমরা জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুরের আন্দোলনে বিশ্বাস করি না। সেই আন্দোলন আমরা করিনি। কারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তা দেশবাসী জানে।”
তিন মাসের হরতাল-অবরোধে বহু বাস পুড়িয়ে এবং পেট্রোল বোমা ছুড়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আসছে সরকার। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এর পেছনে সরকারের ষড়যন্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে সহিংসতার দায় কর্মসূচি আহ্বানকারী পক্ষ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য রয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের।
বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, “বাংলাদেশে এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হচ্ছে বিএনপি। সেজন্য একে শেষ করতে তারা (সরকার) উঠে পড়ে লেগেছে।
“খবরের কাগজে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা রকমভাবে এজেন্সি ও গ্রুপের মাধ্যমে লেখানো হয়। বিএনপির বিরুদ্ধে বিভেদ, বিএনপিতে ‘ঐক্য নেই’, ‘এই হচ্ছে-সেই হচ্ছে’, ‘অমুক গ্রুপ-তমুক গ্রুপ’। আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই- এগুলো কিছুই নয়। বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, থাকবে।”