বার্তা৭১ ডটকমঃ মিরপুর টেষ্টের প্রথম দিনটা অনেকটা নিজেদের করে নিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ৮৮.১ ওভারে ২৪৬ রান করেছে বাংলাদেশে।
সাকিব ও মুশফিক গড়েছেন ৩৫ রানের জুটি। তাদের ওপর আশা ছিল অনেক। খেলছিলেনও ভালো। কিন্তু দিনের শেষভাগে সাকিব মনযোগ হারালেন। ৩৫ রান করে মর্কেলের শিকার হলেন। তাতে দিনের শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের।
মুশফিকুর রহিম ততক্ষণে উইকেটে জমে গেছেন। ১২ ইনিংস পর পেয়েছেন ফিফটির দেখা। মনে হচ্ছিল আরো বড় কিছুর অপেক্ষায় চওড়া হয়ে উঠবে ব্যাট। সাথে ছিলেন সাকিব আল হাসান। দুজনের বোঝাপড়াটা চমৎকার। আশা করা যাচ্ছিল আরেকটি জুটির। কিন্তু ডিন এলগারের বলে আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দিলেন। এলবিডাব্লু। চ্যালেঞ্জ করলেন মুশফিক। নিলেন রিভিউ। অনেকক্ষণ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখেও ঠিক নিশ্চিত হওয়া গেলো না কিছু। তবে আম্পায়ারের ওপর সিদ্ধান্ত। তিনি আউট দিলেন। ১২৫ বলে গড়া মুশফিকের ৬৫ রানের পরিশ্রমী ইনিংসটা এভাবেই শেষ হয়ে গেল। এরপর ডুমিনির বলে লিটন দাস উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন ৩ রান করে।
এর আগে আর মাত্র ৬টি রান হলেই চতুর্থ উইকেট জুটিতে হতো শতরান। কিন্তু ডেইল স্টেইন তা হতে দিলেন না। তার বলটাকে ঠিকভাবে বুঝতে না পেরে ফ্লিক করে শট মিড উইকেটে বাভুমার তালুবন্দী মাহমুদ উল্লাহ। মুশফিকুর রহিমের সাথে তার ৯৬ রানের জুটি ভাংলো। এই জুটির ওপর অনেক আশা করা হয়েছিল। আশার পুরোটা তারা পূর্ণ করতে পারেন নি বটে, তবে দলকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পেরেছেন তারা। নিজেরাও কিছু রান পেয়ে, পেয়েছেন স্বস্তি। ৯১ বলে ৩৫ রান করে ফিরেছেন মাহমুদ।
এর আগে ৮৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। মাহমুদ ও মুশফিক অফ ফর্মে। তাদের জন্য এটা ছিল ভালো করে দেখানোর সুযোগ। দলের ইনিংস মেরামত ও গোছানোর সুযোগ। সেই সময় আর সুযোগটা তারা যথাসম্ভব কাজে লাগাতে চেয়েছেন। দিনের দ্বিতীয় সেশনে তারা আর কোনো উইকেট পড়তে দেন নি। কিন্তু তৃংতীয় সেশনের শুরুতেই মাহমুদ সেট হয়েও ফিরলেন।
মমিনুল ও ইমরুলের আগে দলে ভয় ধরিয়ে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। দলের ১২ রানের মাথায় তিনি নেই। ৬ রান করে ডেইল স্টেইনের ৪০০তম শিকারে পরিণত হয়েছেন। এরপর এই ধাক্কা সামলেছেন ইমরুল ও মমিনুল। দুজনই ভরসা রাখার মতো ব্যাটসম্যান। ইমরুল ২৮ ও মমিনুল ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মধ্যাহ্ন ভোজনের সময়। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিটা ছিল ৬৩ রানের। ওটা শেষ হলো ৬৯ রানে।
এরপর লাঞ্চ থেকে ফিরেও শান্ত ছিলেন মমিনুল ও ইমরুল। কিন্তু ততক্ষণে বোলিংয়ে পরিবর্তন এনেছেন আমলা। ডান হাতি অনিয়মিত স্পিনার জে পি ডুমিনি প্রথমে ৪০ রানে ফিরিয়ে দিলেন মমিনুলকে। উইকেটের পেছনে ক্যারিয়ারের প্রথম ক্যাচটা নিলেন ভিলাস। এর পরের ওভারেই ডুমিনির বলে এলবিডাব্লিউর শিকার ইমরুল। তার বিদায় ৩০ রানে।
টস ভাগ্যটা এবার ভালো মুশফিকুর রহিমের। মিরপুর টেস্টের টস জিতলেন। এবং এই উইকেটে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্তই নিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু দিনের শুরুটা হলো ডেইল স্টেইনের। তামিম ইকবালকেও রেকর্ড বইয়ে নিয়ে গেলেন তিনি। ৬ রানে বিদায় তামিমের। আর তিনি হয়েছেন স্টেইনের ক্যারিয়ারের ৪০০তম উইকেট। তামিম, বাংলাদেশ ও মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামকে একটু বেশি মনে রাখবেন স্টেইন।
অফ স্টাম্পের বাইরে বল দিয়েছিলেন স্টেইন। সেটাতেও ব্যাট চালিয়ে প্রথম স্লিপে আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তামিম। দায়িত্বটা পালন করা হয়নি। শুরুতেই দলকে চাপে রেখে এসেছেন। ইতিহাসের ১৩তম ৪০০ উইকেট শিকারী হলেন স্টেইন।
এই টেস্টে একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। স্পিনার তাইজুল ইসলামকে বাদ দিয়েছে তারা। নিয়েছে অলরাউন্ডার নাসির হোসেনকে। ব্যাট করা নাসির স্পিনেও মন্দ নন। দক্ষিণ আফ্রিকা অফ ফর্মের জন্য বাদ দিয়েছে উইকেট কিপার কুইন্টন ডি কককে। উইকেট কিপার ডেন ভিলাসের অভিষেক হয়েছে এই টেষ্টে।