চলতি বছরের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি পাওয়ায় সব সূচকেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
এবার সব বোর্ড মিলিয়ে গড়ে ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, যাদের মধ্যে ৮২ হাজার ২১২ জন অর্জন করেছে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ।
গত বছর মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ৮২ দশমিক ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। সেই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ পয়েন্ট।
এবার ৮৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ছাত্রী এবং ৮৭ দশমিক ২৭ শতাংশ ছাত্র পাস করেছে। ছাত্রীদের থেকে ছাত্রদের পাসের হার এক দশমিক ৮৬ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।
সোমবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন শিক্ষামন্ত্রী জানান, আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এবার ৯ লাখ ৪ হাজার ১৪৪ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে, পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
সাধারণ বোর্ড থেকে পূর্ণ জিপিএ অর্জন করেছে ৬৫ হাজার ২৫২ জন। গত বছর ৬২ হাজার ৭৮৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
এবার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ২ লাখ ৪১ হাজার ৫৭২ জন পাস করেছে; পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত বছর এ বোর্ডে ৮৩ দশমিক ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে।
মাদ্রাসা বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৪৩৬ জন, যা গতবারের থেকে ৬৮০ জন বেশি।
এছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৩ হাজার ৫৬৬ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে; পাসের হার ৮০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৫২৪ জন। গত বছর এক হাজার ২০৫ জন পূর্ণ জিপিএ অর্জন করেছিল।
এবার ৩ হাজার ৩৭৭টি স্কুলে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর সারা দেশে ১৪টি স্কুল থেকে কেউ পাস করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান।
শিক্ষামন্ত্রী সকালে এই ফলাফলের অনুলিপি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। এ সময় শিক্ষা সচিব এবং শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানরা তার সঙ্গে ছিলেন।
এরপর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশাল জিলা স্কুল, বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বরিশাল কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধানের সঙ্গে কথা কলে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেন।
সার্বিক ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা দিন দিন বাড়ছে।
ইংরেজি, গণিত, পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানে পাসের হার আগের তুলনায় অনেক ভালো হওয়ায় সার্বিক পাসের হার বেড়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ফলাফলে সব সূচকেই ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।”
মাধ্যমিকে এবার সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছে সিলেট বোর্ডে, ৯১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এছাড়া ঢাকা বোর্ডে ৮৫.৯৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৮.৩৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৮.৯৬ শতাংশ, কুমিল্লায় ৮৫.৬৪ শতাংশ, বরিশালে ৮৬.৯৬ শতাংশ, যশোরে ৮৭.১৬ শতাংশ ও দিনাজপুরে ৮৭.১৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে এসএসসিতে।
মোবাইলে ফল জানতে এসএসসি লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে।
গত বছর ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার ছিল ৮২ দশমিক ৩১ শতাংশ। গত বছর পূর্ণ জিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ৭৪৯ জন।
এ বছর ১ ফেব্র“য়ারি থেকে ১৫ মার্চ আটটি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে ১৪ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে পাস করেছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ৮৯৪ জন।
এবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং গণিত ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়।