বার্তা৭১ ডটকমঃ রাষ্ট্রায়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি এবং আর্থিক সূচকের উন্নতি নিশ্চিত করতে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।
সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলোয় এসব দিক দিয়ে উন্নতি না হলে প্রয়োজনে পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারকের অগ্রগতি নিয়ে রোববারের আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্যে এসব বলেন আতিউর রহমান।
এই প্রথম এ ধরনের বৈঠকে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি তিনমাস পরপর এই সমঝোতা স্মারকের অগ্রগতি নিয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সভা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সভায় গভর্নর বলেন, “বারবার আপনাদের মূলধন ঘাটতি পূরণে যোগান দেবে না সরকার। কেননা পুনঃমূলধনীকরণ জনগণের উপর আর্থিক চাপ বাড়ায়। তাই আয় ও মুনাফা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। দক্ষতা বাড়াতে হবে। তাহলেই ফুটো বালতিতে আর পানি ঢালার প্রয়োজন পড়বে না।”
তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন সঠিকভাবে অনুসরণ এবং যথাযথ ঋণ নিয়মাচার মেনে নতুন ঋণ দিতে হবে। গুণমানের ঋণ মঞ্জুরির জন্য পরিচালনা পর্ষদকে দায়িত্ব নিতে হবে।
নতুন ঋণ প্রস্তাব মূল্যায়ন, ঋণ মঞ্জুর ও ঋণ হিসাব ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “মঞ্জুরিকৃত ঋণ একবারে বা এক চেকেই বিতরণ না করে পার্ট-বাই-পার্ট বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। আগের বিতরণকৃত ঋণের সদব্যবহার যাচাই করে ঋণের পরবর্তী কিস্তি বিতরণ করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও ঋণের সদব্যবহার নিশ্চিতকল্পে প্রধান নির্বাহীর কাছ থেকে ‘এন্ড ইউজ কমপ্লায়েন্স’ চাইবে।”
অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে বলে সতর্ক করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, “যে কোনো শাখার গুরুতর অনিয়মের জন্য প্রথমে প্রধান নির্বাহীকেই জবাবদিহি করতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় গাফিলতি থাকলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
“যে কোনো বিষয়ে নন-কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে গাফিলতির জন্য দায়ী প্রধান নির্বাহীদের বিরুদ্ধে অপসারণসহ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্ষদের সদস্যদের গাফিলতির দৃষ্টান্তও বিহিত ব্যবস্থার জন্য সরকারের নজরে দেয়া হবে।”
বৈঠক শেষে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “ব্যাংকগুলোর ক্যাশ রিকভারি, কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স, অটোমেশন ও গুড গর্ভনেন্সের অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”