বার্তা৭১ ডটকমঃ মন্ত্রীরা মানতে না চাইলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
গত ছয় মাসে চার জন ব্লগার খুন হওয়ার পর হত্যাকারীদের ধরতে না পারার মধ্যে উল্টো লেখালেখিতে ‘সীমা লঙ্ঘন’ না করতে আইজিপির পরামর্শের সমালোচনাও করেছেন তিনি।
ব্লগার হত্যার পাশাপাশি কয়েকটি শিশু হত্যার ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে, তা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির প্রমাণ বলে বিএনপির দাবি।
মঙ্গলবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ ধরে সুরঞ্জিত বলেন, “এটাও ঠিক, আমরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছি।”
“পুলিশ বাহিনী চাইলে আসামি ধরতে পারে না, এমন না। আমাদেরও ব্যর্থতা রয়েছে সেটা ভাবতে হবে,” বলেন সাবেক এই মন্ত্রী।
আইজিপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “একের পর এক ব্লগার হত্যা হচ্ছে। আর পুলিশের আইজিপি সাহেব বললেন, ব্লগারদেরও উচিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কিছু লেখা ঠিক নয়। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম হত্যার দায় স্বীকার করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করেন।”
বঙ্গবন্ধু একাডেমির এই আলোচনা সভায় জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন প্রবীণ আইন প্রণেতা সুরঞ্জিত।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও সমৃদ্ধ হবে।
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের আগে তার পরিবারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছিল বলে জনকণ্ঠে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়।
এ নিয়ে আদালত অবমাননার রুল সর্বোচ্চ আদালত দেওয়ার পর তা নিয়ে গত দুদিন শুনানি হয়েছে। নিবন্ধের সপক্ষে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এক ব্যক্তির টেলি কথোপকথনের শ্রুতিলিখন আদালতে দিয়েছে জনকণ্ঠ।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে রায়ের দিন নির্ধারণ করেছে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চ।
সুরঞ্জিত বলেন, “গতকাল কোর্টপাড়া ছিল গরম। সাংবাদিক আর সুপ্রিম কোর্ট কনটেম্পট কেইসে এই প্রথম কনটেস্ট হচ্ছে। এর আগে কোর্টে কনটেম্পট কেইস হলে অভিযুক্তরা বলতেন, ‘হুজুর ভুল হয়ে গেছে মাফ করে দেন’। সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে অতীতে এমন কনটেস্ট কেইস হয়নি। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা।”
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “কেউ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ সকলেরই কাজটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করতে হবে। সাংবাদিকদেরও কোড অফ কনডাক্ট রয়েছে। তাদের সেগুলো বিবেচনা করেই কাজ করতে হয়।”
এই রায়টি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মনে করেন সুরঞ্জিত।