বার্তা৭১ ডটকমঃ
পাটের পাতা থেকে চা উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে এ ধরনের চা বাজারজাত এবং বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘ ২২ বছরের সাধনায় সফল হতে পেরেছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসিমুল গনি বিবিসিকে বলেছেন, ১৯৯৩ সালের দিকে তাঁরা এটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছিলেন। দীর্ঘদিনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা হয়েছে পাট পাতার গুনাগুণ এবং সেটা চা হিসেবে পান করার সময় যথাযথ থাকে কি-না এসব নিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছে পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা।
পাটের পাতা থেকে চা বানানোর প্রক্রিয়ার বিবরণ দিয়ে নাসিমুল গনি বলেন, ফুল আসার আগেই পাট গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করতে হবে। পরে সে পাতা সূর্যের আলোতে শুকোতে সাইজ মতো গুঁড়ো করে নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এরপর মধু বা চিনি দিয়ে এ চা পান করা যাবে। আবার এগুলো ছাড়াও পান করা যাবে। পাট শাকের সব ভেষজ গুনাগুণও পাট পাতা থেকে তৈরি হওয়া চায়েও থাকবে বলে জানান তিনি।
ড. গনি জানান, সব পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেও তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরো একটি টেস্ট করে দেখছে তৈরি করা গুঁড়ো দানায় কোন টক্সিক উপাদান রয়েছে কি-না।
পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মাইনুল হক বলছেন, তোষা পাটের পাতা থেকে তৈরি করা চা সুস্বাদু হবে। কিন্তু দুধ মিশিয়ে এ চা খাওয়া যাবে না।
তার মতে, এটি ‘গ্রিন টি’র বিকল্প হবে এবং গুনাগুণের কারণেই এটি দ্রুতই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে তারা আশা করছেন।
ওয়ার্ছি অ্যাকুয়া এগ্রো টেক নামক একটি প্রতিষ্ঠান পাটের পাতা দিয়ে তৈরি অর্গানিক চা রপ্তানি ও বাজারজাত করনের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এইচ এম ইসমাইল খান বলেন, আপাতত তাঁরা এ চায়ের নাম দিয়েছেন মিরাকল অর্গানিক গ্রিন টি। তবে নাম চূড়ান্ত হবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্টের জন্য করা আবেদন অনুমোদনের পর।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই তার প্রতিষ্ঠান ১৬ কেজি জার্মানিতে পাঠিয়েছে এবং শিগগিরই আরও ২০০ কেজি পাঠানো হবে।
আর বাংলাদেশের বাজারে দেয়ার জন্য ১০০ ও ৫০ গ্রামের দুটি প্যাকেট করা হয়েছে যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৫০ ও ৯৯ টাকা।
তিনি বলেন, প্রতি কাপ চায়ের জন্য খরচ পড়বে এক টাকারও কম।