ঢাকা : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের বলেছেন, “পার্টির নেতাকর্মীরা মনে করছেন মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টিকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় পার্টি ভাবছে। দলের নীতি-নির্ধারকরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআরইউ’র সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু।
জিএম কাদের বলেন, “মহাজোটে যোগ দেয়ার ব্যাপারে নিজেদের আলাদা একটা নির্বাচনী ইশতেহার ছিল। সেখানে উল্লিখিত অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসা উচিত বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।”
তিনি বলেন, “কাউকে ক্ষমতায় বসাতে নয়, জাতীয় পার্টি রাজনীতি করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে। তাই এককভাবে নির্বাচনে গেলে যদি জনগণের ভালো হয় তাহলে সেটিই করা হবে। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।”
গত রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ বলেন, “পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্যে জাতীয় পার্টির ভাবমূর্তি অনেকটা উজ্জ্বল হয়েছে, কিন্তু অবস্থান পরিষ্কার হয়নি। তালাক না দেয়া পর্যন্ত মুখে যত কিছু বলা হোক বিবাহবন্ধন ছিন্ন হয় না। তাই মহাজোটকে তালাক দিতে হবে। পার্টিকে মহাজোট থেকে বেরিয়ে এসে বিরোধীদলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।”
তার বক্তব্যের জবাবে মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “স্যার (এরশাদ) বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। এর চাইতে আর পরিষ্কার কী হতে পারে।” তিনি বলেন, “হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের একক নির্বাচনের ঘোষণার মানে হলো সব দলকে পেছনে ফেলে জাতীয় পার্টি এককভাবে এগিয়ে যাবো সামনের দিকে।”
এর আগে গত ৫ মার্চ ফেনীনদী অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচিতে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে এরশাদের প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, “আপনি বলছেন একক নির্বাচন করবেন। কিন্তু এখনো মহাজোটে আছেন। তাহলে এককভাবে কীভাবে নির্বাচন করবেন।’’ জবাবে এরশাদ বলেন, “সময় সব বলে দেবে।”
আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অবস্থান কী হবে সে বিষয়ে এরশাদের প্রেস ও পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভরায় জানান, “বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দুই দলের নীতিগত দিক প্রায় সমান। তেল আর পানি একসঙ্গে থাকলেও আলাদা করা যায়। কিন্তু পানি-পানি এক হলে পরে কোনোটি আলাদা করা যায় না। এজন্য জাতীয় পার্টি কখনো বিএনপির সঙ্গে জোটে যাবে না। জাতীয় পার্টি এককভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে।”