বার্তা৭১ ডটকমঃ
হৃৎপিণ্ড প্রতিদিন প্রায় ৭০০০ লিটার রক্ত পাম্প করে যা দিয়ে আপনার বাসার পানির ট্যাংকিটিও বেশ কয়েকবার ভরা যাবে। বাড়ির ওই পানির পাম্প কি আজীবন সচল থাকে যত্ন ছাড়া? ৬০-৭০ বছর তো দূরের কথা, দুই বছরই তো চলে না! তাই হৃৎপিণ্ড সচল রাখতে কিছু কাজ তো করতেই হবে। আর এজন্য প্রয়োজন কিছু সহজ ব্যায়াম। ভয় পাবেন না, জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে হবে না, জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমেই এসব ব্যায়াম করা সম্ভব।
সতেজ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম
জীবনযাপনের ধরনটা হোক ‘চটপটে’: আপনার অফিসে কাজের মাঝে কিংবা বন্ধের দিনগুলোতে আরেকটু সক্রিয় থাকুন। একটু হাঁটাহাটি করুন অথবা খেলাধুলাও করতে পারেন। এতে মাথায় চড়ে বসা পাহাড় সমান মানসিক চাপ ঝেড়ে ফেলতে পারবেন। আর আপনার ব্লাড প্রেসারকে বাড়িয়ে দিতে এই মানসিক চাপই দায়ী থাকে, যার ফলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। আপনার জীবনযাপনে ছোটোখাটো পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। এতে হৃদয়ের আয়ুর সাথে আপনার আয়ুও বাড়াতে পারবেন।
হাঁটাহাঁটি হোক একটু দ্রুত: পার্কে কিছুক্ষণ জোরে হাঁটাহাঁটি, কিংবা বাজারে যাবার পথে অল্প রাস্তাটুকু হেঁটে যাওয়া, এরকম ছোটখাটো কসরৎ হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারে। নিয়মিত একটু আধটু ব্যায়াম করলেও আপনি একই ফল পাবেন। যত বেশি ব্যায়াম করবেন কিংবা ছোটাছুটির মধ্যে থাকবেন, হৃৎপিণ্ডের পেশি ততোটাই শক্তিশালী হবে।
কোলেস্টেরলের খুটিনাটি: কোলেস্টেরল মানেই কিন্তু খারাপ না! ভাল কোলেস্টেরলও আছে। এলডিএল কোলেস্টেরল রক্তনালীর দেয়ালে চর্বি জমিয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে যার ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অর্থাৎ এই কোলেস্টেরল হৃৎপিণ্ডের জন্য খারাপ। আবার এইচডিএল কোলেস্টেরল এই চর্বিগুলোকে ঝাড়ু দিয়ে লিভারে নিয়ে যায়, ফলে রক্তনালী ব্লকেজ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এজন্য এইচডিএল কোলেস্টেরল হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো। একটু অ্যাকটিভ থাকা আর এক্সারসাইজ আপনার রক্তে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিবে আর এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাবে। ফলে আপনার কোলেস্টেরল প্রোফাইলে আসবে সঠিক ভারসাম্য এবং সেই সাথে আপনার হৃৎপিণ্ডের ভাল থাকার সম্ভাবনাও বাড়াবে।
ভাবছেন, সিগারেটের ধারে কাছে আর ঘেষবেন না?
হার্টের যেকোনো রোগের ঝুঁকির পেছনে ধূমপান দায়ী। ভাবছেন সিগারেটটা এবার ছেড়েই দিবেন কিন্তু পারছেন না। আগামীকাল সকাল থেকেই ছেড়ে দেবেন ঠিক করছেন কিন্তু সেই কাল আর আসে না, একটু সাহায্য দরকার? এখানে কয়েকটি সাইট আছে, একটু দেখে নিতে পারেন।
হার্টটাকে ঠিক রাখার কাজটা আপনাকেই করতে হবে। জীবনযাত্রা আরেকটু অ্যাকটিভ রাখলে হৃৎপিণ্ডও ভাল থাকবে বছরের পর বছর। তাই অ্যাকটিভ থাকুন আর হৃৎপিণ্ডটাকে সুস্থ রাখুন।
আপনার বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন, যেন তারাও উৎসাহিত হয় তাদের হৃৎপিণ্ডটাকেও ভালো রাখতে।