বার্তা৭১ ডটকমঃ
দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বিক্ষোভের মুখে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই।
মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা সারতে পার্লামেন্টের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
ব্যক্তিগত লাভের লক্ষ্যে এক পুরোনো বন্ধুকে সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি অপব্যবহারের অভিযোগে বিপর্যস্ত হয়ে আছেন পার্ক। তাকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য অব্যাহতভাবে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
পার্ক বলেন, “পার্লামেন্টের উপরই আমার ভবিষ্যতের সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি। এমন কী আমার মেয়াদ সংক্ষিপ্ত করে আনার বিষয়টিও।”
বিবিসি বলছে, তিনি ক্ষমতার শূন্যতার সংকট সৃষ্টি হোক তা চান না বলেও জানিয়েছেন।
পার্ককে অভিশংসনের মুখোমুখি করা হবে কিনা এ ব্যাপারে গেল শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
বিরোধীদলগুলো জানিয়েছে, অভিশংসনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগেই প্রেসিডেন্টের উচিৎ ‘সম্মানের সঙ্গে’ ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া।
যদি পার্ক পদত্যাগ করেন অথবা অভিশংসনের মাধ্যমে তাকে সরিয়ে দেয়া হয় তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে অবশ্যই ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে হবে। মধ্যবর্তী এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের নেতৃত্ব দেবেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পার্ক কিভাবে ক্ষমতা ছাড়বেন সে বিষয়ে একমত হতে পার্লামেন্টের কয়েক মাস লেগে যাবে।
ইতিপূর্বে পার্ক দুই দফা ক্ষমা চেয়েছেন। তাকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়ার রাজনৈতিক সংকট তার ‘মন ভেঙে দিয়েছে’ বলেও দাবি করেছিলেন। কিন্তু বরাবরই পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকে মঙ্গলবার তৃতীয়বারের মতো টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে পার্ক বলেন, “ক্ষমতার শূন্যতা এবং সরকারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না ক্ষমতা হস্তান্তরের এমন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আইনপ্রণেতারা সিদ্ধান্ত নিলেই” তিনি সরে দাঁড়াবেন।
কিন্তু বিরোধীদল ডেমক্র্যাটিক পার্টির য়ুন কন-সুক বলেন, এই বক্তব্য একটি কৌশল ছাড়া কিছু নয়।
তিনি আরো বলেন, “জনগণ তার দ্রুত পদত্যাগ চায়, বাইরে টেনে এনে লুকোচুরি করে পার্লামেন্টের উপর দায় বর্তানো চায় না।”
সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় কাজে চোই শুন-সিল নামে এক বন্ধুর সহযোগিতা নেওয়া এবং তাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিরোধীরা ইতোমধ্যেই পার্কের অভিশংসন দাবি করেছে।
১৯৮৭ সালে বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সব প্রেসিডেন্টই পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করতে পেরেছেন।