বার্তা৭১ ডটকমঃ
ফিলিপাইন সফর থেকে ফিরে এসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাংকের চুরিকৃত অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক করপোরেশনকে (আরসিবিসি) অবশ্যই ফেরত দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের অগ্রগতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গত শনিবার আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ফিলিপাইন যায়। তাদের সফরের মধ্যেই এক বিবৃতিতে রিজলের আইনজীবী থিয়া দায়েব অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর দায় চাপায়।
এ প্রসঙ্গেমন্ত্রী বলেন, ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক করপোরেশনের অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানো অনৈতিক। কারণ তারা এ ঘটনায় দ্বায় স্বীকার করেছে। এখন অর্থ ফেরত দিতে না চাওয়া অগ্রহণযোগ্য। তাদের অর্থ ফেরত দিতেই হবে।
তিনি বলেন, ফিলিপাইন সরকারের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত পেতে আমাদের সব ধরনের আইনি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভুয়া সুইফট বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। ওই অর্থ পরে জুয়ার টেবিলে চলে যায়। বিশ্বজুড়ে তোলপাড়ের মধ্যে ফিলিপাইনের সিনেট কমিটি এই ঘটনার তদন্ত শুরুর পর এক ক্যাসিনো মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধারের পর তা ফেরত পায় বাংলাদেশ।
বাকি সাড়ে ৬ কোটি ডলার উদ্ধারে গিয়ে ফিলিপাইনের মন্ত্রিসভার দুই সদস্য এবং সিনেটের সভাপতির সাথে বৈঠক করেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী।
সিনেট সভাপতিকে উদ্ধৃত করে আনিসুল হক বলেন, তিনি অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেছেন, অন্যায়ভাবে কেউ লাভবান হোক, তাদের সরকার তা হতে দেবে না। অন্যায়ভাবে কারও অর্জিত আয়ের টাকা কেউ রেখে দেবে, সেটাও ফিলিপাইন সরকার হতে দেবে না। বাংলাদেশের হয়ে এই অর্থ আদায়ের জন্য ফিলিপাইন সরকার ও সিনেট লড়ে যাবে।
ফিলিপিন্সের অর্থমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে নিয়ম ভাঙার জন্য রিজাল ব্যাংককে সেদেশে ২ কোটি ডলার জরিমানার বিষয়টি তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। আমাদের বক্তব্য ছিল, এই জরিমানা এবং জরিমানা পরিশোধ করার মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে, আরসিবিসি তার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে। সে কারণে তাদেরকে সম্পূর্ণ টাকা বাংলাদেশকে ফেরত দিতে হবে। এটাকে দেশটির অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত যুক্তি সঙ্গত বলেছেন।
দেশটির আইন প্রতিমন্ত্রী এবং মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সাথেওও দেখা করেন আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে দেশটির সরকার ও আরসিবিসি দুটো মামলা করেছে। একটায় ৬ জন কর্মকর্তা, আরেকটায় দুই- তিনজন আসামি আছেন। আমরা সেখানেও আমাদের যুক্তি তুলে ধরি। আরসিবিসিকে ফেরত দিতেই হবে।
কী পরিমাণ টাকা ফেরত আসবে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কথা ৬৬ মিলিয়নই আসবে। প্রথম কথা হচ্ছে, আমরা ফিলিপাইনের আইনি লড়াই অব্যাহত রেখে যাব। আমরা সরকারের সাথে আলাপ-আলোচনা করছি, তারা যদি টাকা আদায়ে অন্য কোনো পন্থা বের করে, সেখানেও আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
টাকা ফেরত আসতে কতদিন লাগবে- এ প্রশ্নে আনিসুল হক সময় বেঁধে কথা বলতে রাজি হননি।