বার্তা৭১ ডটকমঃ
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বাড়ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ থেকে ২০১৫ অর্থবছরে স্থির মূল্যে জিডিপিতে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩৩.৪২ শতাংশ।২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৯.৫৫ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের জিডিপিতে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান শতাকরা ২০.১৭ভাগ।
মন্ত্রী বলেন, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন আমাদের সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা শিল্পখাতের গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।
শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘প্রথম আর্ন্তজাতিক এসএমই মেলা ২০১৬’ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টির সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন।
শিল্পমন্ত্রী এসময় আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় এলাকাভিত্তিক কাঁচামালের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে শিল্প স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। শিল্প মন্ত্রণালয় প্রণীত জাতীয় শিল্পনীতি ২০১ তেও এ ধরনের দিক নির্দেশনা রয়েছে। এর আলোকে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে দেশব্যাপী কার্যকর সমীক্ষা ও গবেষণা চালানো হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের কোথায়, কোন ধরনের এসএমই শিল্প স্থাপন টেকসই হবে, তা নির্ধারণের কাজ চলছে। এসব শিল্প বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যেক্তাদেল কী ধরনের প্রণোদনা ও নীতিসহায়তা দিতে হবে তাও চিহিৃত করা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক তরুণ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে সহায়তার ক্ষেত্রগুলো নির্ধারণের কাজ চলছে।
চট্টগ্রাম ও তিন পার্বত্য জেলা এ সমীক্ষার আওতাভুক্ত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেশব্যাপী এসএমইখাতের উন্নয়নের কার্যকন পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইন্সপায়ার্ড প্রকল্পের আওতায় একটি যুগোপযোগী এসএমই নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের দক্ষতা বাড়াতে খুব শিগগিরই জাতীয় এসএমই নীতিমালা ঘোষণা করা হবে। এটি চূড়ান্ত করার আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলের এসএমই শিল্প উদ্যোক্তা ও উদ্যেক্তা সংগঠনের পক্ষ থেকে বাস্তবসম্মত পরামর্শ ও সুপারিশ দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। এ খাতের ওপর ভর করেই দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। রফতানি প্রবৃদ্ধি, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্যবিমোচনসহ সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে এখাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। দেশের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ শিল্প ও ব্যবসা এসএই খাতের আওতাতুক্ত। এখাত দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ৭০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে।
শিল্প কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এর বিরাট অবদান রয়েছে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, মোট শিল্প কর্মসংস্থানের শতকরা প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ সৃষ্টি হচ্ছে এখাত থেকে। এসএমই খাত মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ যোগান দিয়ে ধাকে। অর্থনীতির এসব সূচক বিবেচনা করলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক আগ্রগতিতে এসএমই খাতের অবদান সহজে অনুমান করা যায়।
এসএমই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, এসএমই মেলা কমিটির আহবায়ক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), এম এ মোতালেব, হাবিবুল হক, অঞ্জন শেখর দাশ প্রমুখ।