বার্তা৭১ ডটকমঃ
দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য আলাদা নতুন উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা ‘বিলাসিতা’ বলে নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।হাঙ্গেরি সফর থেকে ফেরার পর শনিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আলাদা বিমান কেনার মতো বিলাসিতা করার সময় আসেনি।”
গত রোববার হাঙ্গেরি সফরে রওনা হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে জরুরি অবতরণ করে।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের সেখানে চার ঘণ্টা অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি করতে হয়। ত্রুটি মেরামতের পর ওই উড়োজাহাজেই প্রধানমন্ত্রী বুদাপেস্টে পৌঁছান।
ওই ঘটনার পর সংসদে বিমানমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা বিমান কেনার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নতুন এয়ার ক্রাফট কেনার আমার কোনো প্রয়োজন নাই। আমরা দেশের জন্য নতুন (উড়োজাহাজ) কিনেছি। এখন ব্যক্তি… রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা এয়ারক্রাফট কেনা, এটা… বিলাসিতা করবার মতো সময় আমাদের আসেনি, আমি যেটা মনে করি।
“কারণ গরীবের ঘোড়া রোগ না হওয়াই ভালো। ঘোড়াকে খাওয়াতে, লালন-পালন করতে যথেষ্ট খরচ লাগে। এটার প্রয়োজন নাই, আমি চাইও না। যে প্লেনে আমার দেশে সাধারণ মানুষ চলাচল করবে, সেখানে যদি আমার নিরাপদবোধ না থাকে, তাহলে আমার আলাদা প্লেন নিয়ে কি লাভ। আমি মানুষের সাথে চলি।”
বিমানকে আধুনিকায়নের উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় এ সংস্থার উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপও এসময় তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বিমানের তেল সঞ্চালন পাইপের ‘নাট ঢিলা’ হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে ক্রটি দেখা দিয়েছিল বলে বিমানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, “এটা একটা যান্ত্রিক দুর্যোগ ছিল, আর কিছু না। হয়তো যান্ত্রিক কিছু একটা হয়েছে। সহি সালামতে বেঁচে আছি, আপনাদের সামনে আছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।”
“এক্সিডেন্ট তো হয়ই। ব্রজিলে কী হলো। ফুটবল প্লেয়ারসহ প্লেন ক্র্যাশ করল। এক্সিডেন্ট, এক্সিডেন্টই…এজন্যই এক্সিডেন্ট। এটাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”
“তবে অ্যাক্সিডেন্ট যান্ত্রিক ত্রুটিতেও হতে পারে, আবার মনুষ্যসৃষ্ট কারণেও হতে পারে,” মন্তব্য করে নিজের জীবনের উপর নানা হামলার কথা তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে ত্রুটির ঘটনা তদন্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তিনটি তদন্ত কমিটি করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের গাফিলতিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল বলে তদন্তে প্রমাণ পাওয়ার কথা গত বুধবার বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
এ ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিমান পরিবহন সংস্থার ছয় কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।