বার্তা৭১ ডটকমঃ
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যা বন্ধে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সুচিকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। রবিবার কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক বিশাল সংহতি সমাবেশে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি নাজিব তুন রাজাক এ মন্তব্য করেন।
মালয়েশিয়ার তিতিওয়াংসা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ সমাবেশে ১০ হাজার মালয়েশিয়ান এবং রোহিঙ্গা সমবেত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর অং সান সুচিকে তার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের কথা মনে করিয়ে দেন নাজিব রাজাক।
সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আসিয়ান অঞ্চলের এই নিষ্ঠুরতায় আমি আপোষ করতে পারি না। মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং মানবিক সংকট নিষ্পত্তির জন্য আমরা আসিয়ান সহযোগীর চাপ অব্যাহত রাখব। মিয়ানমারের সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করুন। তা না হলে ভালো হবে না। আমি চুপ থাকব না।’
প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক আরো বলেন, ‘আমি সুচিকে বলতে চাই যথেষ্ট হয়েছে এবার থামুন। দুই দিন আগে আমি একটি বিবৃতি পেয়েছি মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে। সেখানে বলা হয়, আমি যদি আজ সমাবেশ করি তাহলে এটি বোঝাবে যে আমি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছি।’
তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে সতর্ক করেছে, কিন্তু আমি সেটার পরোয়া করি না। আমি শুধুমাত্র একজন নাজিব রাজাক না, আমি এখানে এসেছি মুসলিম উম্মাহর এবং একজন মালয়েশিয়ান হিসেবে।’
স্টেডিয়ামে উপস্থিত জনতা এসময় তাকে উৎসাহ দেন। রাজাক বলেন, ‘এখানে আমার উপস্থিতি এটি বুঝায় না যে আমি তাদের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছি। আমি এই সমাবেশ করছি কারণ রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
সমাবেশে তার মন্ত্রিপরিষদ ছাড়াও মালয়েশিয়ার সাবেক (পিএএস) সভাপতি দাতুক সেরি আব্দুল হাদি আওয়াং এবং ইসলামীদল গুলোর সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিয়ানমার সরকারের বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আসিয়ান চার্টারের একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে সদস্য দেশগুলো একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। মিয়ানমার শুধু একটি আর্টিকেলের কথা বলছে। ওই একটি ছাড়াও আরো অনেক অনুচ্ছেদ আছে। চার্টারের মধ্যে মানবাধিকারের কথা বলে হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার মালয়েশিয়াকে আক্রমণ করে এক বিবৃতি দেয় মিয়ানমার। বিবৃতিতে তারা ‘সার্বভৌম সম্পর্কগুলোর প্রতি মালয়েশিয়ার শ্রদ্ধা দেখানো উচিত’ বলে উল্লেখ করে জানায়, মালয়েশিয়াকে আশিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতির প্রতি অবিচল থাকতে হবে।
নাজিব বলেন, ‘তারা কি অন্ধ ? তারা শুধু ওই একটি অনুচ্ছেদই দেখে? তারা আমাদের কাছ থেকে কি আশা করে? আমরা আমাদের চোখ ও মুখ বন্ধ রাখব? তারা যা ইচ্ছা করবে আমরা কিছুই দেখব না, কিছুই বলব না? তাদেরকে বলছি, আমি আমার চোখ মুখ বন্ধ রাখতে পারব না। যতদিন না রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ব্যবস্থা করা হবে ততোদিন আমরা এর বিরুদ্ধে লড়ে যাব।’