বার্তা৭১ ডটকমঃ
গল্পের বইয়ে বা সিনেমায় ক্রিস্টাল বল দিয়ে তুকতাক করতে দেখেছেন। কিংবা সিনেমায় কোনো ডাইনিকে ক্রিস্টাল বলে কারো ভবিষ্যত দেখতে দেখেছেন। কিন্তু ক্রিস্টালের বাস্তব জাদু সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা আছে?
হ্যাঁ, জাদুকরের তুকতাকের সেই ক্রিস্টাল এখন নিজেই দেখাচ্ছে জাদু! তথ্য সংগ্রহে রাখার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে এই ক্রিস্টাল। সুপারম্যান মুভির কথা মনে আছে? সেখানে কিন্তু এই চকচকে ক্রিস্টাল দেখানো হয় মেমোরি কার্ডের বিকল্প হিসেবে। এবার বাস্তবেও দেখা মিলল তথ্য সংরক্ষণে ক্রিস্টালের চমক। এবং স্থায়িত্বও চোখ কপালে তোলার মতো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্রিস্টালের তৈরি মেমোরি ডিস্কে তথ্য সংগ্রহে রাখা যাবে ১০০ কোটি বছর!
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ্যাম্পটনের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ক্রিস্টালের তৈরি ডিস্কের ধারণ ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমনি তার স্থায়িত্বও অনেক বেশি। ফলে এবার আর কোনো সভ্যতা হারিয়ে যাবে না। অন্তত তথ্যের মাধ্যমে হলেও টিকে থাকবে কোটি কোটি বছর।
ক্রিস্টালের তৈরি ডিস্কে প্রায় ৩৬০ টেরাবাইট তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। আর এগুলো টিকে থাকবে কোটি কোটি বছর। তার মানে দাঁড়াল, এমন একটি ডিস্ক সাধারণ মানের ২২,৫০০ আইফোনের সমান তথ্য ধারণ করতে পারবে।
বর্তমানে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ছোট্ট ক্রিস্টালের ডিস্কে সংরক্ষণ করা আছে হিউম্যান রাইটস এর চিরন্তন ঘোষণাগুলো এবং বাইবেল। বিজ্ঞানীরা এই তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিকে বলছে ফাইভডি। অর্থাৎ এই ফরম্যাটে ডাটা সংরক্ষণ করা যাবে পাঁচ ডাইমেনশনে।
আর ডাইমেনশনগুলো হলো: হাইট, লেন্থ, ওয়াইডথ, ওরিয়েন্টেশন এবং পজিশন অনুসারে। মানে ডাটা বা ছবির সকল কৌণিক দিক থেকে তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। ফলে যেকোনো ভিডিও চিত্র বা ছবি আগের চেয়েও ভালো মানে সংরক্ষণ করা যাবে।
দীর্ঘদিন তথ্য সংরক্ষণে এমন আধুনিক টেকনোলজি এর আগে এতো ব্যাপকভাবে আসেনি। ফলে বিজ্ঞানীরা তাদের স্বপ্নের দুয়ার মেলে দিয়েছেন অনেক দূর। সাউথহ্যাম্পটনের বিজ্ঞানীরা সান ফ্রান্সিসকোর এক সম্মেলনে ঘোষণা দেন, তারা এই প্রযুক্তিকে আরো উন্নত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে চান। এখন দেখা যাক তাদের এই ঘোষণা কতটা আলোর মুখ দেখে।