বার্তা৭১ ডটকমঃ
বাংলাদেশের বিজয় দিবসের যখন আর সপ্তাহখানেক বাকি, তখন পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ডন এক আত্মসমালোচনামূলক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। প্রবন্ধটি লিখেছেন সেদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রসাংবাদিক আসিফ নূরানী।
‘দ্য ওয়ে উই ওয়্যার’ শীর্ষক প্রবন্ধের প্রতিপাদ্য হলো, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক জগত যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
এতে বলা হয়, ‘পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন’ হওয়ায় পাকিস্তান শুধু মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়নি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও বিপুল ক্ষতির শিকার হয়েছে।
দীর্ঘ প্রবন্ধে বাংলাদেশের বরেণ্য চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের চলচ্চিত্রকীর্তি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, অখণ্ড পাকিস্তানের প্রথম রঙিন ছায়াছবি ‘বাহানা’ জহির রায়হানই নির্মাণ করেন এবং তা ছিল উর্দুতে।
প্রবন্ধে বাংলাদেশ অঞ্চলে নির্মিত উর্দু ছায়াছবি এবং এর পরিচালক-প্রযোজকদের অবদান তুলে ধরা হয়। এঁরা হলেন এহতেশাম, মুস্তাফিজ, দোসানী প্রমুখ।
এতে তুলে আনা হয় হারানো দিনের অনেক ছবির নাম – সঙ্গম,বাহানা, কখনো আসেনি, সোনার কাজল, কাঁচের দেয়াল, জীবন থেকে নেয়া, জাগো হুয়া সাভেরা, চান্দা, হামসফর, তালাশ, নবাব সিরাজুদ্দৌলা,সোয়ে নদীয়া জাগে পানি প্রভৃতি। উল্লেখ করা হয় শবনম, রহমানসহ অনেক অভিনেতা এবং কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা ও শাহনাজ বেগমের (রহমতুল্লাহ) নাম।
প্রবন্ধের শেষপাদে বলা হয়, এই সৃজনশীলতা ও বহুমাত্রিকতা হারানোর ক্ষতি গত ৪৫ বছরে পাকিস্তান কীভাবে পুষিয়ে নিতে পেরেছে, কে বলবে? এটা কেবল ধারণা বা অনুমান করা যায়। ১৯৭১ সালে আমরা যা হারিয়েছি তা কেবল একটি ভূখণ্ডই নয়। ‘পূর্ব পাকিস্তান’কে হারিয়ে আমরা সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে আরো দরিদ্র হয়ে গেছি, এটা স্বীকার করতেই হবে।