বার্তা৭১ ডটকমঃ
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দেয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় এবং মদদ দেয়ার জন্য পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রবিবার ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময়ই সন্ত্রাসবাদীদের মদদ ও আশ্রয় দিয়ে এসেছে। আমরা মনে করি যারা জঙ্গি ও সন্ত্রসবাদকে মদদ দিচ্ছে তাদের নিরুৎসাহিত ও বিচ্ছিন্ন করা উচিত। এ ধরনের হামলাকে তীব্র নিন্দা জানাতে আমাদের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। এ ধরনের হামলা কোনো দেশের বিরুদ্ধেই সংগঠিত করা উচিত নয়।’
সন্ত্রাস দমনে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে কামাল বলেন, ‘সন্ত্রাস ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশ- দুই দেশ একই অবস্থানে রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার উৎসই হচ্ছে পাকিস্তান। অতীতে বিভিন্ন জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের ভূমিকা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। এটাকে এখুনি বন্ধ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাশ্মীরের উরিতে সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৯ ভারতীয় জওয়ানের নিহত হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বয়কট করে ভারত। ভারতের পাশাপাশি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটানও সেই পথে হাঁটে। প্রতিটি দেশের তরফেই পাকিস্তানের পরিবেশ সম্মেলনের উপযুক্ত নয় বলে দাবি তোলে। অবশেষে বাতিল হয় সেই সম্মেলন।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বহু প্রতিক্ষীত তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি নিয়েও আশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেকোনো চুক্তিই উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যে রাষ্ট্র কিংবা পক্ষ এই চুক্তির সঙ্গে যুক্ত আছে, তাদের স্বার্থকে দূরে সরিয়ে কোনো চুক্তিই সম্পন্ন হতে পারে না। আমরা মনে করি তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তিও ভবিষ্যতে হতে পারে। যে পথে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগোচ্ছে, আমরা আশা করি কোনো একদিন তিস্তা চুক্তিও সম্পন্ন হবে।
অবশ্য তিস্তা চুক্তির ওপর দুই দেশের সম্পর্ক নির্ভর করবে না বলেও এদিন পরিস্কার করে দিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এই চুক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। এটি ঠিক যে বাংলাদেশ কিছু সমস্যর মুখোমুখি হচ্ছে। পানি দুই দেশের কাছেই অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। তিস্তা চুক্তি বিলম্ব হওয়ার সুযোগ নিয়ে সেদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং মৌলবাদী শক্তিগুলো ভারত বিরোধী ভাবাবেগে ইন্ধন যোগাচ্ছে বলেও জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র সংসদ সদস্য বলেন, গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর ও স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে।
সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশে প্রবেশ ইস্যুতেও মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি কোন সমাধানের পথ যে মিয়ানমারে যখন রোহিঙ্গারা অত্যাচারিত হবে কিংবা হত্যা করা হবে সেসময় আমরা আমাদের সীমান্ত খুলে রাখব? এ ধরনের গণহত্যা ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দুনিয়াকেও তাদের মতামত জানাতে হবে। কিন্তু এরপরও যারা আসছে, আমরা তাদের খাদ্য ও আশ্রয় দিচ্ছি।’