বার্তা৭১ ডটকমঃ এসআইবিএলের ১৮ লক্ষ ৭৬ হাজার শেয়ার বিক্রি হয়ে গেলো, দুই পরিচালকের কেউই জানেন না
পরিচালক এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে তাদের বক্তব্য ডিএসইর কাছে তুলে ধরে। তদন্ত শেষে ডিএসইর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন পাঠায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআইবিএলের কোম্পানি সচিব হুমায়ন কবীর বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, আমাদের দুই পরিচালক পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কোন শেয়ার বিক্রি করে নাই। মূলত শেয়ার বিক্রির বিষয়টি তাদের অজ্ঞাতসারেই হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ তাদেরকে না জানিয়ে তাদের কাছে থাকা এসআইবিএলের ১৮ লাখ ৭৬ হাজার শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করেছে। এমনকি তাদের পোর্টফোলিওতে এসআইবিএলের শেয়ারের পাশে “শুন্য” শেয়ার দেখানো স্বত্বেও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ আইন অমান্য করে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। তাছাড়া আইন অনুসারে নিজ কোম্পানির পরিচালকদের শেয়ার পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বিক্রি করা যায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লি: (এসআইবিএল) এর দুই পরিচালক মেজর (অব.) মো. রেজাউল হক এবং আব্দুল আউয়াল পাটোয়ারির বিরুদ্ধে ঘোষণা ছাড়াই নিজ ব্যাংকের অন্তত ১৮ লাখ ৭৬ হাজার শেয়ার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ডিএসইর ট্রেক হোল্ডার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের মাধ্যমে এ শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইন অনুসারে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কোন কোম্পানির পরিচালকের শেয়ার বিক্রি করা যায় না। ইতিমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের(বিএসইসি) কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এদিকে ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রির বিষয়ে এসআইবিএল বলছে, তাদেরকে না জানিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ দুই পরিচালকের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ বলছে, তারা আইন মেনেই শেয়ার বিক্রি করেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের জুনে এসআইবিএলের পরিচালক ও পর্ষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মো. রেজাউল হকের ৯ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার এবং পরিচালক আব্দুল আউয়াল পাটোয়ারির ৯ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বিক্রি করা হয়। বিষয়টি ডিএসইর নজরে আসলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্ত চলাকালীন সময়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে এসআইবিএলের সংশ্লিষ্ট দুই পরিচালক এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজকে এ বিষয়ে ব্যখ্যা প্রদানের জন্য তলব করা হয়। এসআইবিএলের দুই না জানা স্বত্বেও তারা শেয়ার বিক্রি করেছে। আমাদের দুই পরিচালক ইতিমধ্যেই ডিএসইর কাছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে তাদের অজ্ঞাতসারেই এসআইবিএলের শেয়ার বিক্রি করার অভিযোগ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের ভারপ্রাপ্ত সিইও এ এস এম আহসান হাবিব চৌধুরী পুঁজিবাজার ডটকমকে জানান, সংশ্লিষ্ট দুই জন এসআইবিএলের পরিচালক কি না সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য তারা দেয়নি। তাই আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয় যে তারা এসআইবিএলের পরিচালক কি না। তাছাড়া গ্রাহকের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার আমরা বিদ্যমান আইন অনুসারেই বিক্রি করেছি। এক্ষেত্রে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটে নি।
এ দিকে এ বিষয়ে বিএসইসির উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, ডিএসইর প্রতিবেদন আমাদের কাছে এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এক্ষেত্রে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।