বার্তা৭১ ডটকমঃ
বিশ্বব্যাংক শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে তাদের সাবেক কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত আরো একটি গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দার কাছে হস্তান্তর করেছে। নিয়ম বহির্ভুতভাবে গাড়ি হস্তান্তরের অভিযোগে তদন্ত চলাকালে বিশ্বব্যাংক টয়োটা মডেলের এই গাড়িটি ফেরত দিলো। কাগজপত্র যাচাইশেষে শুল্ক গোয়েন্দা আজ গাড়িটি জব্দ দেখিয়েছে।
এ নিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ বিশ্বব্যাংকের মোট তিনটি গাড়ি জব্দ করলো। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় আনা ১৬টি গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগ আনে শুল্ক গোয়েন্দা। এর ৫দিন পর দু’টি গাড়ি হস্তান্তর করে বিশ্বব্যাংক।
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, টয়োটা মডেলের এই গাড়িটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ অফিস থেকে একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে কাকরাইলস্থ শুল্ক গোয়েন্দার সদর দপ্তরে প্রেরণ করে। এর সাথে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফানের একটি চিঠিও দেয়া হয়। এতে স্বেচ্ছায় গাড়ি সমর্পণের কথা বলা হয়। কাগজপত্র যাচাইশেষে রবিবার গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান,গাড়িটির সাথে চিমিয়াও ফান যে চিঠি দিয়েছে, তাতে শুল্ক গোয়েন্দার চলমান তদন্তে সার্বিক সহযোগিতার অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে।
মইনুল খান বলেন, প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে টয়োটা মডেলের (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-এজেবি-০৬৬) গাড়িটির ব্যবহারকারী ছিলেন নিহাল ফারনান্দো। আইন অনুযায়ী তিনি বাংলাদেশ ত্যাগের পূর্বে ব্যবহৃত কাস্টমস পাশবুক ও ব্যবহৃত গাড়িটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে যাননি। এতে শুল্ক আইন ভঙ্গ হয়েছে এবং এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
নিহাল ফারনান্দো ২০০৮ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর ২০১০ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে সিনিয়র রুরাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন তিনি ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় ক্রয় করেন। তিনি ডিসেম্বর ২০১০ এ এ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিদেশি সংস্থায় কর্মরত প্রিভিলেজড পার্সনদের শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার সংক্রান্ত চলমান তদন্তের প্রয়োজনে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তর থেকে বিশ্বব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। এই পত্রের প্রেক্ষিতে ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ দপ্তর থেকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরে উপস্থিত হয়ে তাদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তারা শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।