বার্তা৭১ ডটকমঃ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু বলব, আমাদের আরও কিছু পরিপক্বতার দরকার আছে।’
আজ রোববার নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি গেজেট প্রকাশের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য এমন কথা বলেন তিনি। গেজেট প্রকাশের জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করে আদেশ দেন আদালত।
সবশেষ গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি চূড়ান্ত করতে আপিল বিভাগ ২০ আগস্ট (আজ) পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আপিল বিভাগে ওঠে।
শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময়ের আবেদন দাখিল করেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, গত তারিখে কী করা হবে, বলা হয়েছিল। আলাপ-আলোচনার কথা বলা হয়েছিল। কার সঙ্গে, কে কে থাকবেন?
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইনমন্ত্রী। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, আপিল বিভাগের সব বিচারপতির সঙ্গে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আলাপ-আলোচনার কথা। আপনারা আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত করলেন না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে আমার কী করার আছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা মিডিয়াতে অনেক কথা বলবেন, কোর্টে এসে অন্য কথা বলবেন। আপনাকে বলছি না, আপনাদের কথা বলছি। অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি বলেন, কবে রাখব (পরবর্তী তারিখ)। সবাই বসবেন।
একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সব বিষয় নিয়ে ঝড় উঠে গেছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা তো কোনো মন্তব্য করছি না। সব তো আপনারাই করছেন। পরবর্তী (তারিখ) কবে চান?
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বন্ধের এক সপ্তাহ পর। প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার মতই আমরা রাখলাম। ৮ অক্টোবর তারিখ রাখলাম।
এ পর্যায়ে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়ার বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দাঁড়ান মাসদার হোসেন মামলার অন্যতম কৌঁসুলি ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার আবেদনটি আছে। আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু বলব, আমাদের আরও কিছু পরিপক্বতার দরকার আছে।’
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের এ নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালাসংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।