বার্তা৭১ ডটকমঃ
ক্রেডিট কার্ডে ব্যাংকগুলোর সুবিধা ফের বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে অশ্রেণিকৃত ক্রেডিট কার্ডের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হতো। ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের নিয়মিত ঋণের ক্ষেত্রে এই প্রভিশন ৩ শতাংশ কমানো হয়েছে। ফলে এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে ২ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করলেই চলবে। রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নগদ অর্থ লেনদেনের ঝুঁকি ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায়ে ব্যয় কমাতে প্রভিশন সংরক্ষণের হার সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে অশ্রেণীকৃত ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের ঋণের বিপরীতে ২ শতাংশ সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে, যা আগে ছিল ৫ শতাংশ। এর আগে, ব্যাংকগুলোর চাপে ক্রেডিট কার্ড নীতিমালা কার্যকরের সময় পাঁচ মাস পিছিয়ে দেয়া হয়।
ব্যাংক ব্যবস্থায় ক্রেডিট কার্ড ঋণ চালু হওয়ার প্রায় দুই যুগ পর গত ১১ মে এ সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ক্রেডিট কার্ডের উচ্চ সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দেয়া হয়। নিয়ম করা হয়, ক্রেডিট কার্ডের সুদহার ভোক্তা ঋণের সুদহারের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ যোগ করা যাবে। অর্থাৎ ব্যাংক ভোক্তা ঋণে গ্রাহকের কাছ থেকে যদি ১২ শতাংশ সুদ আদায় করে থাকে, তার ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ তথা ১৭ শতাংশ সুদ আদায় করতে পারবে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর চাপে নীতিমালার তিন মাসের মধ্যেই নীতিমালার সংশোধন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শুধু তাই নয়, নীতিমালা কার্যকর করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়ার পর সেই নির্দেশনা প্রত্যাহার করার মতো নজিরও সৃষ্টি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ৩ আগস্ট জারি করা সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়, ভোক্তা ঋণের পরিবর্তে ব্যাংক তার যেকোনও ঋণের সুদহারের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ পর্যন্ত আদায় করতে পারবে। সংশোধিত এই সুদহার ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ হারেও ক্রেডিট কার্ডের সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তবে বেশিরভাগ ব্যাংকেরই এই সুদের হার ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। ভোক্তা ঋণের চেয়ে অন্য অনেক ঋণের সুদহার ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি রয়েছে। নীতিমালা সংশোধন হওয়ায় ব্যাংকগুলো সেই বাড়তি সুদ আদায়ের সুযোগ পাবে।
জানা গেছে, দেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ছাড়ের অফার দিয়ে ক্রেডিট কার্ড বাজারে ছাড়ছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই কার্ডের মাধ্যমে বিতরণ হওয়া ঋণের পরিমাণ তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোকে আগে এই ঋণের বিপরীতে ১৫০ কোটি টাকা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হতো, সেখানে প্রভিশনের হার কমায় এখন করতে হবে ৬০ কোটি টাকা।