বার্তা৭১ ডটকমঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, ইসিতে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপের সময়সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঈদের আগে ২৪ আগস্ট থেকে ৬টি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। ঈদের পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আবার সংলাপ শুরু হবে। ইতিমধ্যে তাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্য থেকে নিবন্ধনক্রম অনুযায়ী শেষের দিক থেকে পর্যায়ক্রমে দলগুলোকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রতিদিন দুইটি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। প্রতিটি দলের ১০ জন করে প্রতিনিধিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সচিব জানান, ঈদের আগে নির্বাচন কমিশন ২৪ আগস্ট বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), ২৮ আগস্ট বেলা ১১টায় বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল, বিকেল ৩টায় খেলাফত মজলিশ, ৩০ আগস্ট বেলা ১১ টায় বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকেল ৩টায় জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সঙ্গে সংলাপে বসবে।
তিনি জানান, ঈদের পর ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বিকেল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ১২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বিকেল ৩টায় ইসলামী ঐক্যজোট, ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় কল্যাণ পার্টি ও বিকেল ৩টায় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন। এদিকে, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) প্রেসিডেন্ট এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে চলমান বন্যার কারণে তার দল বৃহস্পতিবারের সংলাপে যোগ দিতে পারবে না, বিষয়টি তারা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ভয়াবহ এ দুর্যোগের সময় জনগণের পাশে থেকে বিএনএফ কাজ করছে। দলের জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দ্বারা গঠিত একাধিক প্রতিনিধি দল দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কাজ করছে। আগামীকাল তাদের জামালপুর জেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে।
বিএনএফ প্রধান বলেন, তারা সংলাপের জন্য ২৪ আগস্ট নির্ধারিত তারিখের এক মাস পর কমিশনের সুবিধামতো সময়ে নতুন সময়সূচি পুনঃনির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, বিএনএফ জানিয়েছে- আগামীকাল তাদের জামালপুরে ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচি রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের জন্য নতুন কোনো সময় নির্ধারণ করা যাবে কিনা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত কর্মসূচি ঠিক করা আছে। সংলাপ ছাড়াও কমিশনের অন্যান্য নিয়মিত কাজও এ সময়ের মধ্যে করতে হচ্ছে। সুতরাং, তাদের জন্য আদৌ নতুন কোনো সময় নির্ধারণ করা যাবে কি যাবে না, তা একান্তই কমিশনের বিষয়। কমিশনাররাই বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে গত ১৬ জুলাই দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও নারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির এ সংলাপ।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক এ সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। সুশীল সমাজের ৫৯ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পরে ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিশন সংলাপে বসে। এই দুই দিনে অর্ধশত গণমাধ্যম প্রতিনিধির কাছ থেকে কমিশন বিভিন্ন পরামর্শ নেয়।