বার্তা ৭১ ডটকমঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তির স্বীকৃতি উদযাপনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক কমিটির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার দুপুর আড়াইটায় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সমাবেশে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করবেন এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
ইতিমধ্যে সমাবেশ আয়োজনে বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগের নেতারা দফায় দফায় সমাবেশস্থল পরিদর্শন করছেন। সমাবেশ মঞ্চ থেকে আশপাশের বিভিন্ন সাজসজ্জ্বার কাজ করছেন মঞ্চ সজ্জার কাজে জড়িতরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সমাবেশ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের রাস্তার দুই পাশে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুনে সজ্জ্বিত করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্লাস টাওয়ারের লেকের পানিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা রাখা হয়েছে। গ্রাম বাংলার আবহে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বিভিন্ন অংশ নিয়ে নৌকার পাল তৈরি করা হয়েছে। সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে নাগরিক কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ রাজধানীতে মাইকিং করা হচ্ছে। সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সাথে সভা করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সমাবেশ সমন্বয়ের জন্য নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এর সদস্য হলেন-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, ডা. সারওয়ার আলী, হারুন-অর-রশিদ ও অসীম কুমার উকিল। এছাড়াও নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেবেন সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ) বিট্রিস কার্লদুল।
এ বিষয়ে নাগরিক কমিটির পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট টিমের যুগ্ম আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সমাবেশে আনিসুজ্জামান স্যার সভাপতিত্ব করবেন। প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। আর ছয়/সাত জন বক্তা থাকবেন। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব রাখা হবে ইউনেস্কোর প্রতি। জাতীয় সংগীত এবং বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে দেশাত্মবোধক গান ও আবৃতি থাকবে। ইউনেস্কোর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভকে ইনভাইট করা হয়েছে। উনি উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তব্য রাখবেন। নাগরিক সমাজের মধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবী যারা আছেন তারা এবং সাংবাদিক সবাই আসবেন। আমাদের মনে হয় প্রচুর লোকসমাগম হবে। এই ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষও আসেন। এটা একটা বিরল গৌরব, সম্মান ও অর্জন। জাতীয় সম্পদ তো বটেই এটা এখন আন্তর্জাতিক সম্পদ।
সমাবেশে শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কণ্ঠে সমবেত গানের পর থাকবে একক সংগীত। লোকগান পরিবেশন করবেন চন্দনা মজুমদার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকবেন রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, ৭ মাচে ভাষণকে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৪৫ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ১৮ মিনিটের ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এই ভাষণে সেদিন মুক্তিকামী বাঙালি জাতি স্বাধীনতার উজ্জীবিত শক্তিতে জাগ্রত হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান লাভ করে।