বার্তা৭১ ডটকমঃ দেখতে অনেকটা গোলাকার সার্চ লাইটেরই মতো। পুলিশের জল কামানের ছাদে এটি বসানো আছে। সার্চ লাইটের মতো হলেও এটি আলোর বদলে সৃষ্টি করে বিদখুটে বিকট শব্দ। গতকালই প্রথম রাজধানীতে এর ব্যবহার দেখা গেছে।
বরাবরই দেখা যায় হরতালে বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ প্রথমে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে থাকে। টিয়ার শেলের ঝাঁজ নিয়ে নানান বিতর্কের ঝড় ওঠে দেশে। এ সরকারের আমলে পুলিশ এক ধরনের পিপার স্প্রে ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীদের চোখে-মুখে নিক্ষেপ করা এ ধরনের স্প্রে নিক্ষেপ করা নিয়েও সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে এবার পুলিশ ব্যবহার করেছে একেবারে অন্য রকম পদ্ধতি। এটিকে কেউ কেউ বলেছে বিকট শব্দ বোমা। কেউ বা বলেছে তাৎক্ষণিকভাবে মাথাব্যথা সৃষ্টিকারী যন্ত্র। যন্ত্রটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সনিক ওয়েপন বলা হয়। বিুব্ধ জনতাকে রুখে দিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
হরতালে বিক্ষোভকারীদের হটাতে অন্য কায়দা বেছে নিয়েছে পুলিশ। জল কামানের গাড়ি ছাদে সার্চ লাইটের মতো একটি গোলাকার যন্ত্র বসানো হয়েছে। বিক্ষোভকারী জমায়েত হতে দেখামাত্রই এটি চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার শাহবাগ মোড়ে ভোরে যখন হরতালের সমর্থনে মিছিলকারীরা জমায়েত হতে থাকেন, তখন এটি চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর বিকট শব্দে সেখানে কারো পক্ষেই টিকে থাকা সম্ভব হয়নি। এর বিকট আওয়াজে দৌড়ে দুই কানে হাত চেপে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে পড়তে দেখা গেছে অনেককে।
এ ব্যাপারে সেখানে দায়িত্বরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা নয়া দিগন্ত প্রতিবেদককে জানান, এ ধরনের যন্ত্রের নাম হচ্ছে ‘হাইটেক সাউন্ড সিস্টেম’। তিনি জানান, এ যন্ত্রটির সামান্য ভলিউমে ৩০০ মিটারের মধ্যে কেউ টিকতে পারবে না।
তিনি বলেন, এর আরো উচ্চ মাত্রাও আছে। এটির মাত্রা আরো বাড়ানো গেলে অনেক দূর পর্যন্ত কারো পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। তবে আশপাশে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় বেলা বাড়ার সাথে তা চালানো যায় না। তবে ভোরে শাহবাগ চত্বরে এটি ব্যবহার করে তারা ভালো ফল পেয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
এ দিকে এ ধরনের হাই টেক সাউন্ড সিস্টেম মারাত্মক শব্দ দূষণকারী একটি বিকট যন্ত্র বলে পরিবেশবাদীরা মনে করেন। ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দী নয়া দিগন্ত প্রতিবেদককে জানান তারা যখন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের ব্যানারে মিছিল বের করে শাহবাগ অতিক্রম করতে যান, তখনই পুলিশ জল কামানের গাড়ি থেকে এটি ব্যবহার করে। তিনি বলেন, এটি চালানো হলে জল কামান গাড়ির আশপাশে তো দূরে থাক অনেক দূরেও দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়।