সরকার গঠনের সোয়া তিন বছর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৬ই মে তিনি সেগুনবাগিচার ওই দপ্তরে যাবেন। তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা জানান, ২০০১ সালের ৭ই মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সর্বশেষ পররাষ্ট্র দপ্তর পরিদর্শন করেছিলেন। এই টার্মে দায়িত্ব নেয়ার পর বেশ ক’বার তার পরিদর্শনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও অন্য ব্যস্ততায় তা পরিবর্তন করা হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শনের দিন-তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর অনেক সংস্কার কাজ হয়েছে পররাষ্ট্র ভবনে। টাইলস ঘষা-মাজা, ডেকোরেশন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে গত ১৫-১৬ দিন ধরে। সরকার প্রধানের সফর উপলক্ষে দাবি-দাওয়া জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন কর্মচারীরা। তবে কর্মকর্তাদের তেমন কোন দাবি নেই, সুযোগ পেলে তারা বিদেশনীতির নানা সমস্যা-সঙ্কটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একজন সিনিয়র কূটনীতিক বার্তা ৭১ কে এর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, পররাষ্ট্র দপ্তর এবং মিশনগুলোয় জনবল সঙ্কট থেকে শুরু করে অনেক সমস্যা রয়েছে। সব সরকারের আমলেই পেশাদার কূটনীতিকে অবহেলা করে ‘রাজনৈতিক বিবেচনা’কে গুরুত্ব দেয়া হয়। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকলেও তাকে বাইপাস করে মিশনগুলোর কাজকর্ম দেখভাল করছেন উপদেষ্টারা। তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, সরকার কিংবা সরকার প্রধানের বিদেশের সঙ্গে যে কোন যোগাযোগের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র দপ্তরকে কাজে লাগানোর সুপারিশ জানাবেন কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মচারীদের এক নেতা বার্তা ৭১ কে বলেন, সুযোগ পেলে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিনের দু’টি দাবি প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য উত্থাপন করা হবে। দাবি দু’টি হচ্ছে- বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মিশনগুলোয় স্থানীয়ভাবে লোক নিয়োগ বন্ধ করে বাংলাদেশ থেকে সৎ, দক্ষ কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়া এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের ফরেন এলাউন্স বৃদ্ধি করা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ মাহমুদ খন্দকার প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রস্তুতির বিষয়ে বলেন, এটি তার রুটিন ভিসিট। তিনি আসছেন, আশা করি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ২০০১ সালে পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্র দপ্তরে একটি জারুল গাছের চারা রোপণ করেছিলেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।