আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে পুলিশসহ শতাধিক।
পুলিশের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন এক নারী শ্রমিক। খোঁয়া গেছে এক পুলিশ সদস্যের শটগান।
হা-মীম গ্র“পের বাংলাবাজার এলাকার প্যাকেজিং কারখানা আর্টিস্টিক ডিজাইন লিমিটেডের এক শ্রমিককে পুলিশে সোপার্দ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়।
কর্মকর্তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করায় ওই শ্রমিককে গত বৃহস্পতিবার পুলিশে দেওয়া হয়েছিল।
বেরণ এলাকার নারী শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ বার্তা ৭১ কে জানান, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে গাড়ি চাপায় ওপেক্স সোয়েটার লিমিটেডের শ্রমিক নাহার (৩০)।
নিহত নাহারের লাশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নিয়ে গেছে বলেও জানান হারুন। শিল্প পুলিশ-১ এর আশুলিয়া জোনের এএসআই তোতা মিয়া নাহারের নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সকাল থেকে শুরু করা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের সময় প্রায় অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া প্যাকেজিং কারখানা আর্টিস্টিক ডিজাইনেও তারা ব্যাপক ভাঙচুর করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কের ওপর টায়ার ও কাঠের গুঁড়িতে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে বিক্ষোভকারীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শিল্প পুলিশের আশুলিয়া জোনের সহকারী পরিচালক মীর ফুসিয়ার বার্তা ৭১ কে জানান, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে আনতে কমপক্ষে এক হাজার রাবার বুলেট, একশ’ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
অন্যদিকে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ঢাকার সাভারের জামগড়া, বাইপাইল, নরসিংগপুর, বাংলাবাজার এলাকাসহ আশপাশের ছোট বড় প্রায় একশ’ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে শিল্প পুলিশ জানিয়েছে।
আর্টিস্টিক-এর মালিক হা-মীম গ্র“পের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই এর সভাপতি এ কে আজাদ বার্তা ৭১ কে জানান, “বৃহস্পতিবার বিকেলে যে শ্রমিককে থানায় দেওয়া হয়েছে তাকে মেরে লাশ গুম করার গুজব ছড়িয়ে এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে।”
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক হারুন বার্তা ৭১ কে জানান, পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহতদের কয়েকজনকে তাদের হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছে।
তারা হলেন- পুলিশ কনস্টবেল মাহাবুবুর রহমান, মফিজুর রহমান, সাইদুল ইসলাম, হা-মীম গ্র“পের শ্রমিক হাসান আলী, ইমাম হোসেন, মোনোয়ার হোসেন, মেডনার গ্র“পের নিরাপত্তা কর্মী মোশাররফ হোসেন ও পথচারী ফজলুল হক। তাদের সবাই মাথায় আঘাত পেয়েছেন।