ঢাকা, ১২ মে: হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়া ও লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অপরাধে যেকোনো সময় আরো নয় এমপির সদস্য পদ বাতিল হতে পারে। আদালতের রায় সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন সক্রিয় হলেই অভিযুক্ত এ নয় সংসদ সদস্যের এমপি পদ বাতিল হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
পদ বাতিল হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা এমপিরা হলেন- চাঁদপুর -১ আসনের ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, ঝিনাইদহ-৩ এর শফিকুল আজম খান, নড়াইল-১ এর কবিরুল হক মুক্তি, রাজশাহী-৪ এর ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তারা সবাই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত। চট্টগ্রাম-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, নোয়াখালী-৬ এর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ফজলুল আজিম, সাতক্ষীরা-৪ এর জাতীয় পার্টির এমপি এইচএম গোলাম রেজা, বরিশাল-৬ এর জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত ও দলটির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের জাতীয় পার্টির এমপি নাসরিন জাহান রত্না।
নির্বাচনী হলফনামায় ভুল ও মিথ্যা তথ্য দেয়া, বিল ও ঋণ খেলাপি হওয়া, দুর্নীতিবাজ হিসেবে অভিযুক্ত ও লাভজনক পদে অধিষিষ্ঠ থেকে নির্বাচন করার অপরাধে তাদের এ পরিণতি হতে পারে।
হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়ার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় টাঙ্গাইল-৫ আসনের জাতীয় পার্টির এমপি আবুল কাশেমের পদ বাতিল করে বিএনপির মাহমুদুল হাসানকে এমপি ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এরমধ্যে ফজলুল আজিম ও ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীরের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে তারা কিছুটা কম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তথ্য গোপন করার অপরাধে ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীরের এমপি পদ বাতিল করার আদালতের রায়ের পর নির্বাচন কমিশন আসনটিকে শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু তিনি এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান।
তবে আদালতের কোনো নির্দেশনা না থাকার পরও শুধু নির্বাচন কমিশনেরর উদাসীনতার কারণে এখনো এমপি পদে টিকে রয়েছেন ঝিনাইদহ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি শফিকুল আজম খান। নবম জাতীয় নির্বাচনে তিনি পৌর চেয়ারম্যানের পদ আঁকড়ে রেখে এমপি নির্বাচন করেছেন।
একইভাবে নড়াইল-১ আসনের কবিরুল হক মুক্তি ও সংরক্ষিত নারী আসনে নাসরিন জাহান রত্না এমপি হয়েছেন। বিগত কমিশনের আমলে এ অপরাধ প্রমাণিত হলেও অজ্ঞাত কারণে ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।
অথচ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (১) সি অনুযায়ী, লাভজনক কোনো পদে থেকে কেউ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবে না বলে উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া হলফনামায় তথ্য গোপন রাখার পরও জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও এমপি রুহুল আমিন হাওলাদার, বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির এমপি এইচএম গোলাম রেজার সংসদ সদস্য পদ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে নির্বাচন কমিশন বাতিল করেনি।
বিএনপির এমপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তিনি অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অর্নাস ডিগ্রিধারী বলে উল্লেখ করলেও নবম জাতীয় নির্বাচনী হলফনামায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘নেই’ বলে উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম-২ আসনে তার প্রতিদ্ববন্দ্বী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম কমিশনের কাছে লিখিত আপিলের মাধ্যমে এ অভিযোগটি করেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বার্তা ৭১ কে বলেন, “হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়া বা তথ্য গোপন করার বিষয় প্রমাণিত হলে কমিশন আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু যে অভিযোগগুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সে ব্যাপারে কমিশনের কিছুই করার নেই।”