বার্তা৭১ ডটকমঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা একদিকে বলে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিরোধী দলকে কথা বলতে, সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। এটা কেমন প্রতারণা? আসলে প্রতারণা বলতে যা বোঝায়, আওয়ামী লীগ তার চ্যাম্পিয়ন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক প্রতিবাদ সভায় মওদুদ এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এই সভার আয়োজন করে।
মওদুদ আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বললেও তার পরিবেশ তৈরি করছে না। বিরোধী দলগুলোকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সরকারি খরচে নৌকায় ভোটের প্রতিশ্রুতি চাইছেন, যা সম্পূর্ণ নির্বাচনী আইনের পরিপন্থী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপি একমাত্র বিরোধী দল, যারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী। যতই কৃত্রিম বিরোধী দল তৈরি করেন না কেন, কাজ হবে না। সবার অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের মতো ভোটের চেষ্টা আর সফল হবে না।
মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন চাই না। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক পরিবেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। কারণ, দেশের জনগণই আমাদের একমাত্র শক্তি। কিন্তু আমাদের সব গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কোথাও সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ বলা হচ্ছে, সরকার চায় সব দল নির্বাচনে আসুক।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষ শান্তি ও গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা স্বৈরাচার, একদলীয় শাসন পছন্দ করেন না। আমার বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় নিশ্চিত হবে। খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হয়ে আসবেন, কোনো ষড়যন্ত্র তাঁকে আটকে রাখতে পারবে না।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বাংলাদেশে এখন সংবাদপত্রের শান্তিপূর্ণ স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। তাঁরা চাইলে সব কথা তুলে ধরতে পারেন না। বিএনপির নিউজ একটু বেশি দিলেই তাদের কাছে ফোন আসে।
প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, নিম্ন আদালত সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর গেজেট প্রকাশ করে পুরোটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। আগে যেটি ছিল সুপ্রিম কোর্টের হাতে, কিন্তু এখন সেটি নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণে।
মওদুদ আরো বলেন, এখন আর কোনো ভয়-ভীতি ও শঙ্কামুক্ত রায় দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা আমি নিজে হলেও পারতাম না। কারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খাতা-কলমে আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। কোনো বিচারক মুক্তমনে বিচার করতে পারেন না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমির হোসেন বাদশা। সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, এলডিপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ প্রমুখ।