বার্তা৭১ ডটকমঃ কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা ৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিম ও দেহরক্ষী মো. জাহিদসহ কেরানীগঞ্জস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মামুন।
তিনি জানান, কারাগারে প্রবেশের পরপরই ইরফানসহ দেহরক্ষীকে শরীর তল্লাশির পর নিয়ম অনুযায়ী কারাগারে করোনাভাইরাস সতর্কতার জন্য ভেতরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
এর আগে, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড মো. জাহিদকে এক বছর করে জেল দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস ও বিদেশি মাদক রাখার দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে দু’জনকে।
এদিকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফের উপর উগ্র হামলার ঘটনায় দাপুটে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের পুত্র ইরফান শিগগিরই কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সিটি করেপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে লিখিত আকারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জনপ্রতিনিধি বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেবে। পুরোন ঢাকার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছর সাজা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ আসা মাত্রই কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফানকে বরখাস্ত করা হবে।
ইতোমধ্যে অবৈধভাবে মাদক, অস্ত্র এবং ওয়াকিটকি রাখার অপরাধে ইরফানকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এখন মানুষের মনে প্রশ্ন, শিগগিরই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন ইরফান।
র্যাবের বিশেষ অভিযানের দিন সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বরখাস্ত সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের কাছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় ইরফান সেলিমকে কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ইরফান মোহাম্মদ সেলিম বা যেকোনো কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অপরাধের কারণে আদালত কর্তৃক দণ্ড প্রদানের ঘটনা ঘটলে সেই বিষয়টি যদি সিটি করপোরেশন কর্তৃক লিখিত আকারে মন্ত্রণালয় আসে, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডিতে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে আজ সোমবার দুপুরে সোয়ারি ঘাটের দেবী দাস লেনে হাজী সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। নয়তলা ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থাকতেন ইরফান চৌধুরী। সেখানে লাইসেন্সহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া যায়।
পরে এ ঘটনায় ওই বাসা থেকে ইরফান ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে গ্রেপ্তার করে মদ্যপান ও ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য এক বছর করে কারাদণ্ড দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।