বার্তা৭১ ডটকমঃ বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে অবমাননার প্রতিবাদে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দেয়ার পাশাপাশি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বিক্ষোভের খবর বিশ্ব মিডিয়া ফলাও করে প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স২৪ শিরোনাম করেছে, বিশ্বনবীর ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদে বাংলাদেশে ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলুতে শিরোনাম করেছে, ফ্রান্স বয়কটের আন্দোলন বাংলাদেশে গতি পেয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা শিরোনাম করেছে, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বাংলাদেশে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে।
তুর্কির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশে ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাসের দিকে সংরক্ষিত রেজিস্টারে কড়া মন্তব্য জানাতে যাত্রা শুরু করে। এ সময় সবাইকে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। ফ্রান্সের সুগন্ধি ও কসমেটিকসের বড় একটি বাজার বাংলাদেশ।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ঢাকায় আন্দোলনকারীরা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রোর প্রতিকৃতি তৈরি করে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
ফ্রান্স২৪ বলছে, পুলিশের ধারণা ৪০ হাজার লোক বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে। ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস অভিমুখে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আটকায়। কোনো রকম সহিংসতা ছাড়াই অনন্ত ১০০ পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত থেকে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের থামায়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি রাজনৈতিক দল ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে এটি আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের বৃহৎ মসজিদ (বায়তুল মুকাররম) থেকে এটি শুরু হয়েছিল বলে খবরে প্রকাশ করা হয়।
২০১৫ সালে প্রথম ফ্রান্সের শার্লি হেবদোতে ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশ করা হয়। পরে এটি আবার আলোচনায় আসে ফরাসী শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির হাত ধরে। ওই শিক্ষক ক্লাসরুমে নবীজির ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেন। এরপরই গত সপ্তাহে এক মুসলিম তরুণ ওই শিক্ষককে খুন করেন। যদিও পুলিশের গুলিতে ওই তরুণ নিহত হয়েছিলেন।
গত বুধবার খুন হওয়া ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপরই ফ্রান্সের মুসলিমরা ম্যাঁক্রোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তাদের ধর্মকে দমন করা ও ইসলামফোবিয়াকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করছেন তিনি। ম্যাঁক্রোর এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পরই তুরস্ক-ইরানসহ গোটা মুসলিম বিশ্ব ক্ষোব্ধ হয়।