বার্তা৭১ ডটকমঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীতা কখনো সহ্য করা হবে না। বঙ্গবন্ধুর দেশে তার ভাস্কর্য হবেই, এতে কোনো সন্দেহ নাই।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামপুরের ধোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা উচ্ছেদের হুমকির প্রতিবাদে এই “মহাসমাবেশ” আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব ’৭১। অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিলেন শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ ( বাংলাদেশ শাখা)।
তিনি বলেন, এ উপমহাদেশে আলেমগারী কিছু ভণ্ড আছে। যারা এক সময় ইংরেজি ভাষাকে হারাম বলে মুসলমানদের পিছিয়ে দিলেন। একাত্তরেও কিছু ভাড়াটিয়া আলেম ফতোয়া দিল পাকিস্তান ভাঙলে ইসলাম ভেঙে যাবে। আজকে আবার ফতোয়া দেয়া হলো, ভাস্কর্য নাজায়েয। আমি বাবুনগরীদের কাছে বিনয়ের সাথে প্রশ্ন রাখতে রাখতে চাই, আপনারা আগের ফতোয়াবাজধারীদের মতো। আমার ধারণা আপনারা তাদেরই উত্তরসূরী। আপনারা ধর্মকে সামাজিক কাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাতে চান। ধর্মকে পুঁজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধিতাকারীদের হুশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা একাত্তরে অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেয় নাই। আপনারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কথা বলবেন আমরা কি আপনাদের চুমো দেবো? না বুঝে ভাস্কর্য নিয়ে বলে থাকলে ক্ষমা চান, আর যদি জেনে শুনে বলে থাকেন তাহলে পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আরে ভাস্কর্য তো আপনাদের শানের পাকিস্তানেও আছে। অধিকাংশ মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আমি হালাল-হারামের কথা বাদই দিলাম। আমার প্রশ্ন, সব মুসলিম দেশে যদি ভাস্কর্য থেকে থাকে তাহলে বাংলাদেশে থাকতে দোষ কি?
আসল কথা হলো আপনারা বঙ্গবন্ধুকে সহ্য করতে পারেন না। কারণ বঙ্গবন্ধুর কারণে আপনাদের পাকিস্তান টিকে নাই।
গৌরব ৭১ এর সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এম.পি, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, শহীদ সন্তান নুজহাত চৌধুরী শম্পা, শমি কায়সার, ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইবুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল রোজারিও, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
এছাড়া গৌরব ৭১ এর সহ সভাপতি হাবিবুর রহমান রোমেল, শেখ রাসেল ( ইউএস ইঙ্ক) এর রবিউল ইসলাম রূপম, আওয়ামী নেতা নেহেরীন মোস্তফা দিশি, ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, ঢাকা -৪ ও ৫ এর সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ, ঢাকা-৪ এর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।