বার্তা৭১ ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবচেয়ে কার্যকর এবং পরীক্ষিত অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়েই আমরা গণটিকাকরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। আপনারা জেনেছেন, ভারত টিকা রফতানির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেশেই যাতে করোনা ভাইরাসের টিকা উৎপাদন করতে পারি সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। নিজেদের টিকা তৈরিতে কয়েক মাস সময় লাগবে। আমরা দেশের সকল নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় শুরু হওয়া এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সম্প্রচার করে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাষণ সম্প্রচারিত হয়।
বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে রাশিয়া এবং চীনের টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। উপহার হিসেবে চীনের কাছ থেকে টিকা ইতিমধ্যেই আমরা পেয়েছি। আমরা টিকা পাওয়ার জন্য আমেরিকার কাছেও অনুরোধ জানিয়েছি।
তিনি বলেন, বিশ্ব টিকাকরণ সংস্থা কোভ্যাক্সের কাছ থেকেও আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকা পাবো। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা এক কোটি টিকা ক্রয়ের ব্যবস্থা নিয়েছি। খুব শিগগিরই দেশে টিকা আসতে শুরু করবে।
বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঈদের দিন আনন্দের দিন। মনের সব কালিমা দূর করে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে যাওয়ার মধ্যেই ঈদের আনন্দ। আজকের দিনে আমরা হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, লোভ, অহমিকা, ক্রোধ, অহংকার ইত্যাদি যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেদের মুক্ত করে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার শপথ নেবো।
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু বলে প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি যথাসম্ভব ঘনঘন সাবানপানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সেই সাথে গরম পানির ভাপ নিতে পারেন।
প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে এবারও আমাদের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হচ্ছে। আমরা ঈদ উদযাপন করবো, তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কোনোভাবেই এই ঈদ উদযাপন যাতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির উপলক্ষ হয়ে না উঠে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
দেশের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন না। অনেকের কোনো বাহ্যিক লক্ষণ না থাকায় আপনি বুঝতে পারবেন না আপনার পাশের ব্যক্তিটিই করোনা ভাইরাস বহন করছে। ফলে আপনি যেমন করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন, তেমনি আপনার নিকটাত্মীয় বা পাড়া-প্রতিবেশীকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন। মনে রাখবেন, সবার উপরে মানুষের জীবন। বেঁচে থাকলে আসছে বছর আবার আমরা আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবো’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।