বার্তা৭১ ডটকমঃ টানা ১১ দিন ফিলিস্তিনের গাজাকে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করা ইসরায়েল অবশেষে যুদ্ধবিরতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিস থেকে গাজায় হামলা বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
নেতানিয়াহুর অফিসের ঘোষণার আগে বৃহস্পতিবার (২০ মে) ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যুদ্ধবিরতির এই সম্মতি আসে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির ধরন ও অন্যান্য দিক নিয়ে আলাপ করতে বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে মিশর, তবে এই যুদ্ধবিরতি হবে ‘দ্বিপক্ষীয় ও শর্তহীন’। তবে কখন থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে সে বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
হামাস এবং ইসলামী জিহাদও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। হামাস ও ইসরায়েলের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ২টা এবং বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
হামাসের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি হতে হবে ‘পারস্পরিক এক একসঙ্গে’।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার সময়ও অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক ক্ষণ গণনার সময়ও উভয়পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই সময়েও ইসরায়েল সীমান্তে রকেট হামলার সংকেত বেজে ওঠে এবং এবং গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলার শব্দ শুনতে পান রয়টার্সের এক প্রতিবেদক।
এদিকে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির এই ঘোষণার আগে মিশরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসলামী জিহাদের (পিআইজে) সঙ্গে ইসরায়েল এ যুদ্ধবিরতিতে মত দিয়েছে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকেও বার বার অনুরোধ করা হচ্ছিল।
এর আগে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস বলেন, ‘দুনিয়াতে যদি নরক থেকে থাকে, তবে সেখানে বাস করছে গাজার শিশুরা।’
ইহুদি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ দমনে গত ১০ মে থেকে গাজায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের আগ্রাসনের জবাবে গাজা থেকে রকেট হামলা চালাচ্ছে হামাসও।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৫ জনই শিশু। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বিশাল এলাকা। অন্যদিকে হামাসের রকেট হামলায় প্রাণ গেছে ১২ ইসরায়েলিরও।