বার্তা৭১ ডটকমঃ পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারি অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।
বুধবার (৪ আগস্ট) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া।তবে সফরকারিদের কম রানে আটকে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান সংগ্রহ করে তারা।
পাঁচ ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওয়ানডে ফরম্যাটে বিশ্বের যে কোনো দেশের আতঙ্ক বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই ক্ষুদে সংস্করণে অনেকটাই পিছিয়ে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগারদের উত্থানের গ্রাফ আশাব্যঞ্জক নয়।
এদিকে অক্টোবরে অপেক্ষা করছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।তাই পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি দলের শক্তিমত্তা যাচাইয়ের অন্যতম উপলক্ষ হিসেবেই নিয়েছে বাংলাদেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মেহেদী হাসানকে দিয়ে বোলিং আক্রমণ শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে তিনি দেন মাত্র ১ রান। পরের ওভারে আসেন প্রথম ম্যাচের নায়ক নাসুম আহমেদ। ওভারে দুটি বাউন্ডারিসহ ১২ রান দেন তিনি। পরের ওভারের তৃতীয় বলে অ্যালেক্স ক্যারিকে (১১) নাসুম আহমেদের তালুবন্দি করেন মেহেদী। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
৬ষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। চতুর্থ বলে সরাসরি বোল্ড করে দেন ১৪ বলে ১ চারে ১০ রান করা জস ফিলিপেকে। মুস্তাফিজুর রহমানের কাটারটি ছিল লেগস্টাম্পের বাইরে। বলটার লাইন না বুঝেই ব্যাট চালিয়েছিলেন ফিলিপে। যা ঘটার তাই ঘটে। স্টাম্প উপড়ে যায়। ৩১ রানে অজিদের দ্বিতীয় উইকেট পতন।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পর হেনরিক্স আর মার্শের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া। ৫২ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন এই দুজন। অবশেষে ২৫ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩০ রান করা হেনরিক্সকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান সাকিব। বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডারকে সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করায় বোল্ড হন হেনরিক্স।
অন্যপ্রান্তে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলেন মিচেল মার্শ। ৪২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করা মার্শকে থামান শরীফুল ইসলাম। তার বলটি মার্শের ব্যাট ছুঁয়ে কিপার সোহানের গ্লাভসে জমা হয়।
এরপর শুরু আসা-যাওয়ার খেলা। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে (৪) বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় শিকার ধরেন মুস্তাফিজ। ১০৩ রানে পাঁচ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। পরের বলেই কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন অ্যাস্টন আগার (০)। মুস্তাফিজের হ্যাটট্রিক করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে বলটি ওয়াইড হয়ে যায়। পঞ্চম বলে কোনো রান আসেনি। টার্নারকে (৩) ফেরান শরীফুল। নির্ধারিত ২০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১২১ রান। ৪ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার মুস্তাফিজ।
১২২ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২১ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।ইনিংসের ২.২ ওভারে মিচেল স্টার্কের গতির বলে বোল্ড হন সৌম্য সরকার। প্রথম ম্যাচে ২ রানে আউট হওয়া এ ওপেনার এদিন ফেরেন শূন্য রানে।সৌম্য আউট হওয়ার ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলে জশ হ্যাজলউডের বলে বোল্ড হন নাঈম শেখ। আগের ম্যাচে ৩০ রান করা নাঈম এদিন আউট হন ১৩ বলে ৯ রান করে।
সৌম্য সরকার, নাঈমের মতো একই কায়দায় বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন সাকিব আল হাসাানও। সাজঘরের পথ ধরার আগে ১৭ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
সাকিবের পর আউট হয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অ্যাশটন অ্যাগারের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে শরীর থেকে দূরে ব্যাট চালিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বল ডেকে আনেন স্টাম্পে। চার বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। রিয়াদের পর ২৩ রান করে ফিরেন মেহেদী।
এরপর নুরুল হাসান ও আফিফ হুসেনের জুটি বাংলাদেশকে পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে।২০ বলে ৩ চারের সাহায্যে ৩৩ রান করেন নুরুল হাসান। অন্যদিকে ২৮ বলে এক ছক্কা ও ৫ চারের সাহায্যে ৩৭ রান করেন আফিফ হুসেন।