বার্তা৭১ ডটকমঃ মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় কার্যত বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। মানুষকে স্বাভাবিক জীবন ফেরাতে শুধু জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য বিশ্বের অনেক দেশই বিভিন্ন সংস্থার টিকা ব্যবহার করছে। যদিও এসব টিকার কোনোটিরই স্থায়ী অনুমোদন ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের প্রথম কোভিড প্রতিরোধী ভ্যাকসিন হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অনুমোদন লাভ করেছে ফাইজার।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাইজারের তৈরি কোভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের উভয় ডোজ যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পেয়েছে। বিশ্বের প্রথম কোনো দেশে করোনা টিকা হিসেবে এই অনুমোদন পেল ফাইজার।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, অতীতে কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ভ্যাকসিনটিকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এফডিএর সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফাইজারের ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ বছর ও এর বেশি বয়সী সকল মানুষের জন্য স্থায়ীভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে টিকা গ্রহীতারা এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন।
এফডিএ জানিয়েছে, করোনার ভয়াল থাবায় দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত এখন অনেকটা উন্নতির দিকে। দেশটিতে প্রথম শনাক্ত কোভিডের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে ফাইজারের টিকার কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়ার পরপরই এই স্থায়ী অনুমোদনটি দেওয়া হলো।
এ দিকে এফডিএর কমিশনার জেনেট উডকক জানিয়েছেন, ফাইজারের ভ্যাকসিনকে স্থায়ীভাবে অনুমোদন দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে মাইলফলক একটি বিষয়। এর মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকরা টিকা গ্রহণের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন। তার দাবি, মানব শরীরে দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণের মাধ্যমেই ফাইজারকে সম্পূর্ণভাবে অনুমোদন প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে গেল বছরের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ফাইজারের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার নাগরিকদের কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ হিসেবে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় এফডিএ। সে সময় বিবৃতির মাধ্যমে সংস্থাটি জানিয়েছিল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ফাইজার বা মডার্নার টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজের টিকা গ্রহণের ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
এছাড়া যারা জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের করোনা টিকা গ্রহণ করেছেন, তাদেরকেও এই সময়সীমার মধ্যে ফাইজার অথবা মডার্নার ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ প্রদান করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসির তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বা ৯০ লাখেরও বেশি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণ মানুষের চেয়ে তাদের গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক অংশে বেড়ে যায়।